সুর করে করে পড়ছেন একজন ‘আয় আয় আয় আয়রে, আসো চাচা যুবক ছাওয়াল মেয়ে পোলাপান, দেখে যাবেন হাছেন মোল্লার বায়োস্কোপ বাপজান’। পড়ছেন ঢুলে ঢুলে, পয়ার-ত্রিপদী সব রকম ছন্দ মিলিয়ে।
গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে চাঁদনী রাত, বাড়ির উঠোন, হারিকেনের আলো কেন্দ্রে রেখে গোল করে ভিড়, পাতার পর পাতা উল্টে পুঁথি পড়ে যাচ্ছেন একজন- এসব দৃশ্য খুবই নিবিড়। সময় বদলেছে ঢের। নাগরিক ‘সভ্যতা’ সবকিছুকে হই হই করে গ্রাস করে নিচ্ছে। পুঁথি সাহিত্যও তার ভয়াল থাবার নিচে। এখন কেউ আর পুঁথি শোনে না, পড়ে না। যারা জানতো ‘সোনাভান’, ‘ছয়ফল মুল্লুক বদিউজ্জামান’, ‘শ্যামারোখ জেবল মুল্লুক’, ‘আমির হামজা’, ‘জঙ্গে কারবালা’, ‘গাজী আর চম্পাবতীর প্রেমকাহিনী’; তারাও হারিয়ে যাচ্ছেন মৃত্যুর পথ ধরে।
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে শতাব্দী ওয়াদুদের কণ্ঠে পুঁথি শুনে ভালোও যেমন লাগে, অবাকও হতে হয়। ‘হঠাৎ পুঁথি পাঠের ভাবনা মাথায় এলো কেন?’ প্রশ্নের উত্তরে তিনি দোহাই দেন ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’-এর। শতাব্দী অভিনীত চলচ্চিত্র এটি। একদিন পরেই, ১৮ ডিসেম্বর, মুক্তি পাচ্ছে দেশব্যাপী। এ ছবির জন্যই পুঁথি পাঠ করেছেন তিনি।
‘তবে প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না’, বলছিলেন ছবিটির পরিচালক রিয়াজুল রিজু, ‘আমার মাথায় যখন ভাবনা এলো শতাব্দী দা’র কণ্ঠেই এটা মানাবে ভালো, তাকে বলা হলে, আপত্তি করে বসলেন। ’ কণ্ঠ ভালো না- এটা সেটা অজুহাত। তবুও নাছোড়বান্দা রিজু। অবশেষে শতাব্দী সময় চেয়ে নিলেন দুই দিন। ওই দুই দিন তিনি সারাক্ষণ প্র্যাকটিস করে তবেই সময় দিয়েছেন রেকর্ডিংয়ের।
পুঁথির কথা লিখেছেন মাসুম রেজা। অমিত মল্লিক করেছেন সংগীতায়োজন। রিজু জানাচ্ছিলেন, পুঁথির ফর্ম আর বায়োস্কোপের ধুন দু’টোকে মিলিয়ে আমরা কাজটি করেছি। আলাদাভাবে এটি প্রকাশ পেলেও, ছবিতে পুরোটা নেই বলে জানালেন রিয়াজুল রিজু।
‘বাপজানের বায়োস্কোপ’ ছবিতে শতাব্দী ওয়াদুদ ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন সানজিদা তন্ময়, শহীদুজ্জামান সেলিম, মাসুদ মহিউদ্দিন প্রমুখ। ছবির কাহিনী ও সংলাপ লিখেছেন মাসুম রেজা।
শতাব্দীর পুঁথি পাঠের ভিডিও:
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
কেবিএন/