অস্কারজয়ী অভিনেত্রী শার্লিজ থেরন অভিনীত ‘অ্যাটমিক ব্লন্ড’ হচ্ছে অ্যাকশন থ্রিলার ছবি । আর হুমার ‘ভাইসরয়স হাউস’ তৈরি হয়েছে ভারত-ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে।
এপ্রিলে ‘দ্য ফেইট অব দ্য ফিউরিয়াস’-এর দুর্দান্ত সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার নতুন ছবি নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন শার্লিজ থেরন। এবারের ছবির নাম ‘অ্যাটমিক ব্লন্ড’।
১৯৮৯ সালে বার্লিন ওয়াল ভেঙে ফেলার সময় এক অ্যাজেন্টকে হত্যাকারী একদল নিষ্ঠুর গুপ্তচরের বিরুদ্ধে তার লড়াইকে ঘিরে এগিয়েছে ছবির গল্প। এ ছবির জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। ছবির শুটিং করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। হাটুর হাড়ে পেয়েছিলেন আঘাত, ভেঙে গিয়েছিলো দুটি দাঁত। অভিনয়ের খাতিরে মারামারি করতে গিয়ে নিজের দুটি দাঁত ভেঙে ফেলেছেন।
সাউথ বাই সাউথ ওয়েস্ট চলচ্চিত্র উৎসবে ছবির প্রদর্শনীতে শুটিংয়ের সময় অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে নিজের দাঁত ভাঙার কথা জানান তিনি। থেরন বলেন, ‘ছবির শুটিং শুরুর আগে প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় আমি পেছনের দুটি দাঁত ভেঙে ফেলি। দাঁত ঠিক করতে শুটিং শুরু হওয়ার আগেই আমি অপারেশন করিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো সমস্যা দূর হয়নি। উল্টো দাঁতগুলো দেখতে বিশ্রী হয়ে গেছে। দাঁতের জন্য এখনও আমাকে সার্জারি করাতে হচ্ছে। এটা খুবই উদ্ভট একটা ব্যাপার। ’
শার্লিজ থেরনের বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। এখনও দারুণ গ্ল্যামারের চমক নিয়ে পর্দায় উপস্থিত হতে পারেন, তিনি এটা দেখিয়ে দিয়েছেন। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড, সিলভার বিয়ার, গোল্ডেন গ্লোব, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড অ্যাওয়ার্ড জয়ী সেরা অভিনেত্রী তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকান হলেও বর্তমানে নিজেকে আমেরিকান নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। শার্লিজ থেরনই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান কোনও অভিনেত্রী, যিনি অভিনয়ে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে অস্কার পুরস্কার নিজের ঝুলিতে পুরেছেন।
কিছুদিন আগে তার অভিনীত ‘দ্য ফেইট অব দ্য ফিউরিয়াস’ মুক্তি পেয়ে বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। ‘দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট’, ‘দ্য অ্যাস্ট্রোনেটস ওয়াইফ’, ‘সুইট নভেম্বর’, ‘ফিফটিন মিনিটস’, ‘দ্য ইটালিয়ান জব’, ‘ম্যাড ম্যাক্স’ ‘প্রমিথিউস’-এর মতো ঝড় তোলা ছবির দুর্দান্ত অভিনেত্রীটি এখনও ফুরিয়ে যাননি, এটা তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন।
১৯৪৭ সালের দেশভাগ নিয়ে উপমহাদেশের মানুষের ভাবনা আজও চলমান। কেন দেশভাগ হলো, কিভাবে হলো— এ নিয়ে আলোচনা, বিতর্কের শেষ নেই। এবার দেশভাগ নিয়ে সেই ঐতিহাসিক আগস্ট মাসেই ভারতে মুক্তি পাচ্ছে ‘ভাইসরয়স হাউস’। হিন্দিতে রূপান্তরের পর ছবির নাম বদলে হয়েছে ‘পার্টিশন : ১৯৪৭’। ব্রিটিশ- ভারতের সর্বশেষ বড়লাট লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সময়ে ভাইসরয়ের ভবনের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনা নিয়েই চলচ্চিত্রটির গল্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন ভারতের স্বাধীনতা অবশ্যম্ভাবী, তখন বড়লাট হয়ে আসেন এই লর্ড মাউন্টব্যাটেন। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী এডুইনা মাউন্টব্যাটেন, যিনি তার রূপের জন্য জগদ্বিখ্যাত ছিলেন।
ভারতের স্বাধীনতা প্রদানের কার্যক্রমে একের পর এক ভিন্নমত, উত্তাল সময়ে মাউন্টব্যাটেনদের জীবন এবং শেষে অনিবার্য ভারত বিভাগই এই চলচ্চিত্রের প্রধান উপজীব্য। এর পাশে মাউন্টব্যাটেনদের প্রাসাদে ভিন্ন ধর্মের দুই কর্মচারীর প্রণয় দেখানো হয়েছে। এই দু’জনের প্রেমকে কেন্দ্র করে পর্দায় এসেছে সেই সময়ের সমাজের নানা বৈষম্য।
এ ছবি নিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন হুমা কোরাইশি। ফেব্রুয়ারিতে বার্লিনের অফিশিয়াল সিলেকশনে জায়গা করে নিয়েছে হুমা অভিনীত ‘ভাইসরয় হাউস’ ছবিটি। অফিশিয়াল সিলেকশনের পাশাপাশি বার্লিনে প্রিমিয়ারও করছে ছবিটি। এসব কারণে ছবিটি এখন আলোচনার কেন্দ্রে। অবশ্য ‘ভাইসরয়স হাউস’ নিয়ে আলোচনার কারণ আছে আরও। ছবির পরিচালক হলেন গুরিন্দর চাড্ডা, যার ‘ব্যান্ড ইট লাইক বেকহ্যাম’ আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলো সারা বিশ্বে। আর তার মাধ্যমেই হতে যাচ্ছে হুমার হলিউড অভিষেক। এ ক্ষেত্রে হুমাকে ভাগ্যবতী বলতেই হবে!
‘ভাইসরয়স হাউস’-এ হুমার উপস্থিতি এবং অভিনয় দেখে তাকে সই করিয়েছে ত্রইকা ট্যালেন্ট। এই হলিউড এজেন্সি হলিউডি বিখ্যাত অভিনেতা মাইকেল ফাসবিন্দরের সব কাজকর্ম সামলান। সূত্রের খবর, ছবিতে হুমাকে দেখে এবং ভারতে তার ছবি দেখে ত্রইকা আপ্লুত। ‘ভাইসরয়স হাউস’-এর কারণে বিশাল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির চোখে পড়েছেন হুমা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার অভিনয়ের সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছেন তারা। এমনও শোনা যাচ্ছে যে একটি ইতালীয় ছবিতে হুমার কাজের ব্যাপারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এসও