জয়ার মতে, “অনিমেষের প্রথম সিনেমা ‘জিরো ডিগ্রি’তে আমি কাজ করেছিলাম। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় ‘ভয়ংকর সুন্দর’ ‘জিরো ডিগ্রি’র চেয়েও পরিনত।
নির্মাতা অনিমেষ সম্পর্কে জয়ার মূল্যায়ণ হলো— ‘অনিমেষ বরাবরই একজন মেধাবী, শক্তিশালী নির্মাতা। সবসময়ই সে শক্তিশালী গল্প বলার সাহস রাখে। এই ছবির মুল নায়ক বা সঞ্চালক ছবিটির গল্প। পানিবিহীন একটি দিন কল্পনা করে দেখুন তো! প্রচলিত বিষয়গুলো এড়িয়ে পানির মতো একটি বিষয়কে উপজীব্য করে ছবি তৈরির সাহস কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন। প্রচলিত গল্প বলার ধরণ থেকে আলাদা করে গল্প বলার চেষ্টাও আছে ছবিটিতে। এক একজন নির্মাতার আদর্শ, চিন্তা, গল্প বলার ঢঙ আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। এই ছবিতেও আলাদা করে গল্প বলার চেষ্টা আছে। এক্ষেত্রে নির্মাতা সফল। নতুন কোনো কিছুকে বুঝতে না পারার দায় নির্মাতার নয়। দর্শকেরও নতুনকে গ্রহণের প্রস্তুতি থাকতে হবে। ’
ছবিটির দুই প্রধান চরিত্রের শিল্পী পরম ও ভাবনার অভিনয় নিয়ে জয়া বলেন, ‘অভিনয়ের সুর, তাল, লয় সব ভালো ছিলো। ভাবনা নয়নতারা চরিত্রে কনভিনসিং । পরমের চরিত্রটা ভীষণ মায়াময় লেগেছে লেগেছে। পরমকে একজন আদর্শ হোটেল বয়ের মতই লেগেছে। দু’জনের কেমিস্ট্রি ভালো লেগেছে। অন্যরাও যে যার জায়গায় ভালো করেছে। ’
জয়ার মতে, ‘লাইট, ক্যামেরা মোটামুটি। তবে টেকনিক্যালি বলতে গেলে কালার কারেকশন কনভিনসিং নয়। আর ভালো লাগেনি অনলাইন প্রচারনা। পোস্টার প্রচারনা আরেকটু ভালো হতে পারতো। অনিমেষের কাছে থেকে এটুকু আশা করতেই পারি। ছবিটির প্রথমার্ধ নিয়ে কিছু অবজারভেশন আছে কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ অবশ্যই আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে । ’
দেশীয় চলচ্চিত্রের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জয়ার ভাষ্য, ‘আমাদের দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ কতোটা কষ্টসাধ্য তা নির্মাতা বা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিমাত্রই জানেন। এখানে জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ একজন ডিরেক্টরকেই করতে হয়। নানামুখী বাঁধা পেরিয়ে ছবিটা আলোর মুখ দেখে। বাহির থেকে নিন্দা-আক্রমণাত্মক কথা বলা এখানে যতটা সহজ সিনেমা নির্মাণ করা ততোটাই কঠিন একটি প্রক্রিয়া। প্রতি বছর দুর্বল গল্প-অভিনয়-রিমেক গল্পের চিত্রনাট্যে প্রচুর সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু সেইসব সিনেমা নিয়ে কাউকে তেমন কিছু বলতে দেখা গেলো না। কিন্তু অনিমেষের এই ‘ভয়ংকর সুন্দর’ নিয়ে এমন আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া আমাকে অবাক করেছে। বুঝতে পারিনি স্বগোত্রীয়দের এই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণ কী?’
রোববার (২৭ আগস্ট) জয়া তার ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, “ভয়ংকর সুন্দর’-এর প্রোডিউসারও অনিমেষ আইচ। একই সাথে অর্থলগ্নি ও পরিচালনা করা একটি দুঃসাহসিক কাজ। অর দ্বিতীয় ছবি বানাতে অনিমেষের তিনবছর লেগে গেলো। নানা প্রতিকূলতার মাঝে দাঁড়িয়েও কিন্তু নিজের মতো করে গল্পটা বলতে পেরেছে, যেখানে আমরা অনিমেষ আইচকে খুঁজে পাই। চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনে অনিমেষ আইচ এমন পদক্ষেপের জন্য বাহবা পেতে পারেন। কিন্তু তা না করে নেগেটিভ প্রতিক্রিয়ার সংস্কৃতি চালু হলো। এটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে কী প্রডিউসারসিপ দাঁড়াবে? তবে সময়ই সবচেয়ে বড় বিচারক। আমি মনে করি, সময়ের বিচারে ভয়ংকর সুন্দর হারিয়ে যাবার সিনেমা নয়। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৭
এসও