বাবা জো জ্যাকসনের কঠোর শাসনে বেড়ে উঠেছেন মাইকেল। বাবার হাতে প্রায়ই বেল্ট ও বেত্রাঘাত খেতে হতো তাকে।
মৃত্যুর আগে দুই দশক ধরেই পপসংগীত, বিনোদন আর মাইকেল জ্যাকসন ছিলেন প্রায় সমার্থক। ২০০৯ সালের ২৫ জুন তিনি চলে গেছেন চিরশান্তির দেশে। তার শিল্প ছিলো আগাগোড়া চমকে মোড়া।
পৃথিবীকে যেন চাঁদের মাটি ভাবতেন জ্যাকসন! তাই গোড়ালিতে চাপ দিয়ে দু’পা এগিয়ে-পিছিয়ে তিনি পরিবেশন করে গেছেন তার বিখ্যাত নাচ ‘মুনওয়াক’। দর্শক-শ্রোতারা তা দেখছেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। ভৌগলিক সীমারেখা ছাড়িয়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর বিশাল অংশ মাইকেল জ্যাকসনের সংগীত ও নাচে অবিভক্ত ও মন্ত্রমুগ্ধ। ৫৯তম জন্মদিন (২৯ আগস্ট) উপলক্ষে রইলো বিখ্যাত এই গায়ক সম্পর্কে জানা-অজানা কিছু তথ্য—
** সর্বকালের সবচেয়ে সম্মানিত শিল্পী
২৩ বার গিনেস রেকর্ড, ৪০টি বিলবোর্ড অ্যাওয়ার্ড, ১৩ বার গ্র্যামিজয় এবং ২৬টি আমেরিকান পুরস্কার ঘরে তোলায সর্বকালের সবচেয়ে সম্মানিত শিল্পী ধরা হয় মাইকেল জ্যাকসনকে।
** আফ্রিকান-আমেরিকান হিসেবে প্রথম
এই কিংবদন্তির গাওয়া ‘বিলি জিন’ গানটির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই! এর পেছনে রয়েছে একটি মজাদার গল্প। আফ্রিকান-আমেরিকান হিসেবে মাইকেল জ্যাকসন প্রথম তারকা যার গাওয়া গানটি এমটিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছিলো।
** সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মৃত শিল্পী
মৃত্যুর পরও নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন মাইকেল জ্যাকসন। সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মৃত শিল্পী হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়াল্ড রেকর্ড গড়েন জ্যাকসন।
** বয়স যখন ৫
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে পারফরমেন্স করেন মাইকেল জ্যাকসন। পাঁচ ভাইকে নিয়ে তৈরি এমজে গ্রুপের সঙ্গে মিলে ‘ক্লাইম্ব এভরি মাউন্টেইন’ গানটি গেয়েছিলেন তিনি।
** সর্বকালের সেরা অ্যালবাম ‘থ্রিলার’
জ্যাকসনের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে তার ষষ্ঠ স্টুডিও অ্যালবাম ‘থ্রিলার’। মাত্র এক বছরের মধ্যে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া অ্যালবামের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করে এটি। এখনও অটুট আছে সেই রেকর্ড। সারাবিশ্বে এর প্রায় ১০ কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। অ্যালবামটি সব রেকর্ড ভেঙে ১৯৮৪ সালে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার জিতে নেয়। ‘থ্রিলার’-এর এই অভাবনীয় জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এর মিউজিক ভিডিও। এতে ভৌতিকভাবে উপস্থাপন করা হয় পপসম্রাটকে। এ গানের মাধ্যমেই মূলত বিশ্বব্যাপী মিউজিক ভিডিওর জনপ্রিয়তার প্রচলন শুরু হয়।
** মাদাম তুসোয় তৃতীয় স্থান
মাদাম তুসো জাদুঘরে মাইকেল জ্যাকসনের মোমের মূর্তি ও অন্যান্য জিনিসপত্রের প্রদর্শনী হয়। এর মাধ্যমে তার শৈশব থেকে শুরু করে জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সাফল্য ও তার মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা পান দর্শনার্থীরা। এখানেই শেষ নয়, বিশ্বের প্রতিটি মাদাম তুসো জাদুঘরে রয়েছে মাইকেল জ্যাকসনেরে মোমের মূর্তি। এদিক থেকে তিনি তৃতীয় তারকা। এ ছাড়া বিশ্বের সব জাদুঘরে রয়েছে এলভিস প্রিসলি ও ম্যাডোনার মূর্তি।
** ১৯৯৭ সালের সেরা জনপ্রিয় তারকা
১৯৯৭ সালে মাইকেল জ্যাকসনকে সেরা জনপ্রিয় তারকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মাইকেল জ্যাকসনের মতো ক্ষণজন্মা শিল্পী যুগে যুগে আসে না। বিশ্বজোড়া কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে আজও তিনি অমর। এভাবেই চিরদিন দর্শক-শ্রোতার স্মৃতিতে বারবার ফিরে আসবেন পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
বিএসকে/এসও