চার বছরের ক্যারিয়ারে (১৯৯৩-৯৬) অমর নায়ক সালমান উপহার দিয়েছিলেন ২৭টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে তার নায়িকা ছিলেন ৮জন।
সালমান-মৌসুমীর অভিষেক ছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’-এর বিপুল সাফল্যের পর ‘অন্তরে অন্তরে’ও সুপারহিট হয়। সালমান- মৌসুমী জুটির চাহিদা তখন তুঙ্গে। ঠিক এমন সময়ই কী এক অজানা কারনে (পারিবারিক কারণও হতে পারে) সালমান– মৌসুমী আর জুটি বাঁধতে রাজি হননি। দু’জনই সিদ্ধান্ত নিলেন যে, আর একসঙ্গে কোনো ছবিতে অভিনয় করবেন না। জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে পরিচালকরা বেশ বিপাকে পড়ে যান। কারণ ওই সময় মৌসুমী ছাড়া প্রতিষ্ঠিত সব অভিনেত্রীই ছিলেন সালমানের সিনিয়র। বিশেষ করে চম্পা ও দিতি। তাদের সঙ্গে জুটি করেও লাভ হবেনা। সালমান হয়ে পড়েন মৌসুমীবিহীন একা। পরে অবশ্য এই জুটির আবারও দেখা হয়েছিলো, মাত্র দু’বারের জন্য ‘দেনমোহর’ ও ‘স্নেহ’ ছবিতে। সফল জুটি হওয়ার পর তাদের ছবি মাত্র ৪টি।
মৌসুমীকে ছাড়াই কিছু একটা উপায় নিশ্চয়ই বের হবে, হলোও তাই। সে সময় পরিচালক জহিরুল হক সিদ্ধান্ত নেন যে, ইন্ডাস্ট্রির আরেক নতুন মুখ শাবনূরকে নিয়ে সালমানের সঙ্গে ছবি বানাবেন। শাবনূর অবশ্য এরই মধ্যে এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ দিয়ে ব্যর্থ, আরও দু’ একটি ছবিও করেছিলেন, সাফল্য পাননি। শাবনূরকে নায়িকা হিসেবে নিতে সালমানের আপত্তি ছিলো না। কিন্তু প্রযোজক সায় দিচ্ছিলেন না। পরে অবশ্য জহিরুল হক তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন।
সালমান-শাবনূর জুটির প্রথম ছবি ‘তুমি আমার’। বানিয়েছিলেন জহিরুল হক, যিনি ৮০র দশকে ‘সারেন্ডার’, ‘বিজয়’, ‘জনি ওস্তাদ’ তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ‘তুমি আমার’ ছবি ১৯৯৪ সালে ব্যাপক সফলতা পায়। এরপর আরও ১৩টি ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেন সালমান-শাবনূর। কিন্তু এই জুটিও হুমকির মুখে পড়েছিলো। কারণ সালমানের স্ত্রী সামিরা শাবনূরকে সহ্য করতে পারছিলেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে মনোমালিন্য চলছিলো। সম্প্রতি সামিরার স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে যে, তিনি সালমানকে শর্ত দিয়েছিলেন শাবনূরের সঙ্গে কাজ করার জন্য। স্ত্রীর কথা রাখতে সালমান ‘হ্যা’ বলেছিলেন। বেঁচে থাকলেও সালমান-শাবনূর জুটির অপমৃত্যু ঘটতো বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
১৯৯৪ সালের শেষের দিকে জীবন রহমান পরিচালিত ‘প্রেম যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন সালমান-লিমা। পরের বছর দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘কন্যাদান’ চলচ্চিত্রেও দেখা যায় এই জুটিকে। কিন্তু এই জুটি খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি।
১৯৯৫ সালে হাফিজউদ্দিন পরিচালিত ‘আঞ্জুমান’ চলচ্চিত্রে জুটি বাঁধেন সালমান-শাবনাজ। এই ছবির পর ‘আশা ভালোবাসা’ ও ‘মায়ের অধিকার’ ছবিতেও সালমান-শাবনাজ জুটিকে দেখা যায়। নাঈম-শাবনাজ জুটির বাইরে শাবনাজের সঙ্গে সফল জুটি গড়েছিলেন সালমান শাহ।
সালমানের অন্য নায়িকারা হলেন বৃষ্টি, শিল্পী, শাহনাজ ও শ্যামা। ১৯৯৬ সালে মালেক আফসারী পরিচালিত ‘এই ঘর এই সংসার’ চলচ্চিত্রে সালমানের নায়িকা হিসেবে দেখা যায় বৃষ্টিকে। একই বছরে মডেল ও অভিনেত্রী শিল্পী সালমানের সঙ্গে অভিনয় করেন ‘প্রিয়জন’ চলচ্চিত্রে।
ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ ছবিতে সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাহনাজ। এই ছবিটি সালমান শাহ মারা যাওয়ার পরপরই মুক্তি পায়। অন্যদিকে শ্যামা সালমানকে নায়ক হিসেবে পেয়েছিলেন কাজী মোরশেদ পরিচালিত ‘শুধু তুমি’তে। এর বাইরে আরও কয়েকটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন এই নায়ক। নায়িকার তালিকায় ছিলো আরও কিছু নাম। মহানায়কের অকাল মৃত্যুর কারণে ছবিগুলো অালোর মুখ দেখেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৭
এসও