শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হলো তাসকিনের। তিনি বললেন, ‘আমি কোনো কিছু মাথায় রেখে অভিনয় করিনি।
তাসকিন জানান, ২০০২ সাল থেকে সিডনিতে থাকছেন তিনি। পড়াশোনা ও চাকরির পাশপাশি অভিনয়টাও চালিয়ে যাচ্ছেন। জিসানের আরেকটি পরিচয় তিনি জনপ্রিয় নির্মাতা তানিম রহমান অংশুর আপন ছোট ভাই।
২০১৭ সালে অংশুর ‘আদি’ ছবির শুটিংয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন তাসকিন। সে সময় ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর নির্মাতা দীপংকর দীপন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চরিত্রটি তখনই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দীপন তৎক্ষণিক একটি দৃশ্যে তাকে অভিনয় করতে বলেছিলেন। খুব সফলভাবে সেটি সম্পন্ন করেছিলেন তাসকিন। এরপর শুটিংয়ে সবার সহযোগিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন রহস্যজনক ও ভয়ঙ্কর জিসান চরিত্রটি, যে কি-না পুরো ছবিতে সবাইকে দৌঁড়ের ওপর রাখে। যে মন্দচরিত্র হয়েও নায়ক-নায়িকা ছাপিয়ে দর্শকের আবেগের অনেকখানি দখল করে নেয়। এ সফলতা কেবলই তাসকিনের। এরই উত্তাপ তিনি টের পাচ্ছেন সিডনিতে বসে।
তাসকিনের ভাষায়, জিসান চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে তার খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। এমনকি নির্মাতাও তাকে ‘ইমপ্রোভাইজ’ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যেমন একটি দৃশ্যে জিসান জ্বলন্ত সিগারেট হাতে কঁচলে নিভিয়ে ফেলে। জিসানের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যায় মনে করেই এমন দৃশ্যটি ধারণ করার জন্য নির্মাতাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তাসকিন। কারণ এই সেই ছদ্মবেশী হাসনাত করিম জিসান, যে কি-না বিদ্বেষী ও বিধ্বংসী, যার হৃদয় ঘৃণায় পরিপূর্ণ। ওর আক্রোশে গোটা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তেমনই নীল ছক কষে সে। 'ঢাকা অ্যাটাক'-এ দেখানো হয় একাই সে কীভাবে সবার ঘুম হারাম করে দেয়।
‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনীর পর থেকেই মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে জিসান তথা তাসকিনের নাম। ‘কে এই ভিলেন’— এমন জিজ্ঞাসার পাশাপাশি তার প্রশংসাস্তুতি গাইছেন শোবিজ তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক। খলনায়কের প্রচলিত ধারা থেকে অনেকখানিই বেরিয়ে এসে অভিনয় করেছেন তাসকিন। অনেকে আন্তর্জাতিক মানের অভিনেতার ছায়া খুঁজছেন তার মাঝে। আবার হুমায়ুন ফরীদির পর নতুন কেউ এলো বলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন অনেকে।
‘ঢাকা অ্যাটাক’ অভিষেক ছবি হলেও তাসকিনকে এর আগে ছোটপর্দায় দেখা গেছে। তার হিসেব অনুযায়ী চিত্রনায়ক আরিফিন শুভর সঙ্গে ২০০৭ সালে অভিনয় করেছিলেন ‘চক্র’ নামের একটি ধারাবাহিকে। এরপর আশিকুর রহমানের ‘প্রিন্সেস’সহ আরও কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন তাসকিন।
তাসকিন জানান, তার হাতে এখন তিনটি ছবি। এর মধ্যে দুটির দৃশ্যধারণ শেষ। এগুলো হলো শুভর সঙ্গে ‘মৃত্যুপূরী’ আর এবিএম সুমনের সঙ্গে ‘আদি’। অন্যদিকে শাকিব খানের ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এও থাকছেন তাসকিন।
আলোচিত এই খলনায়ক জানান, শুভ ও সুমনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব বেশ পুরনো। কাজের বেলায় তাদের সহযোগিতা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্রে বাঁকবদলের স্বপ্ন দেখেন তিনি। এগিয়ে চলেছেন সেই স্বপ্নের হাইওয়ে ধরে।
তাসকিন বলেন, “আদি’র শুটিংয়ের জন্য অর্ধমাস দেশে থাকতে হয়েছিলো। চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা বাড়লে একেবারে দেশের মাটিতে ফিরে আসবো। সিডনিতে একা থাকি, দেশের মানুষের জন্য মন কাঁদে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৭
এসও