সোমবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার ১২তম সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান মেয়েকে বাঁধনের অভিভাবকত্বে দেওয়ার আদেশ দেন।
বিচারক তার আদেশে বলেন, কন্যা শিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা।
রায়ের পর বাঁধন সাংবাদিকদের বলেন, মেয়ের অভিভাবকত্ব পাওয়ার জন্য গত নয় মাস আমি অনেক সংগ্রাম করেছি। মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছি। কিন্তু আজ আমি নিশ্চিন্ত। আদালত মেয়ের সম্পূর্ণ গার্ডিয়ানশিপ আমাকে দিয়েছেন।
২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে বিয়ে হয় আজমেরী হক বাঁধনের। তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।
২০১৭ সালের আগস্টে বাঁধন আদালতে অভিযোগ করেন, মেয়ে সায়রাকে তার প্রাক্তন স্বামী জোর করে নিয়ে যান। এরপর একরকম জোর করে তাকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
মা হিসেবে মেয়ের অভিভাবকত্ব চেয়ে গত বছরের ৩ আগস্ট মামলা করেছিলেন বাঁধন। আদালত সেই মামলার রায় দেন সোমবার (৩০ এপ্রিল)।
বিষয়টি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও জানিয়েছেন তিনি।
তার আইনজীবীর সঙ্গে ধারণ করা এটি ভিডিও প্রকাশ করেন ছোট পর্দার এই অভিনেত্রী। ভিডিও বার্তায় আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না জড়ানো কণ্ঠে বাঁধনকে কথা বলতে দেখা যায়। ক্যাপশনে পুরো বিষয়টির বর্ণনাও দেন তিনি।
ফেসবুকে বাঁধন লিখেন, আজ ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখ, দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত, (ঢাকা) যে আদেশ আমার মামলায় দিলেন, তা একটি যুগান্তকারী রায় এবং আদালত পাড়ায় মাইলফলক। আইনজীবীরা বললেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশে এটি বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে।
এই আদেশ পাবার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ...।
বাবা তার কন্যা শিশুর পাসপোর্ট আটকে রেখেছেন। বিজ্ঞ আদালত সেটা ফেরত দিতে নির্দেশ দিলেন। যদি বাবা না দেন, তবে বাদীকে থানায় জিডি করতে বলেছেন এবং নতুন পাসপোর্ট দেবার জন্য পাসপোর্ট অফিসে বিজ্ঞ আদালত চিঠি ও আদেশ পাঠিয়ে দেবেন বলেও জানালেন। কন্যা শিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন যেহেতু মা'ই কন্যা শিশুর অভিভাবক...।
বাঁধন আরও লিখেছেন, আমার জীবনের এই অংশটায় যারা যারা সমর্থন দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা। আপনাদের নাম নিতে চাই না, শুধু অনুরোধ করবো মেয়েকে যেন এভাবেই, আমার নিজের সামর্থ্যে, মানুষ হিসেবে বড় করতে পারি, সেই দোয়া করবেন।
সততাই যে সর্বোত্তম পন্থা সেটা আবারও প্রমাণ হলো। নিশ্চিত ছিলাম, সঠিকভাবে আইনকে উপস্থাপন করতে পারলে আইনের সুশাসন যে দেশে এখনো আছে, সেটা প্রমাণ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৮
এমআই/জেআইএম/আরআর