হ্যা, এটা ঠিক- এ দেশে অসংখ্য গীতিকবি, সুরস্রষ্টা এবং সঙ্গীত পরিচালকের জন্ম হয়েছে। কিন্তু একাধারে গীতিকবি, সুরস্রষ্টা-সঙ্গীত পরিচালকের আর্বিভাব হয়নি বললেই চলে।
সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে সফল হয়েছেন একজনই। তিনি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। দেশিয় সঙ্গীতাকাশের একমাত্র ধ্রুব তারা। সেই তারা ঝরে পড়েছে, বলা যাবে না। খানিক মেঘে ঢাকা পড়েছে মাত্র। গানের কথা ও সুরের মোহ মায়ায় তিনি জ্বলে উঠবেন, উঠবেনই।
দেশাত্মবোধ, প্রেম-ভালোবাসা-বিরহ, আধ্যাত্মিক, লোকসহ সব ঘরানার গানই তিনি তৈরি করেছেন। অডিও-প্লেব্যাক দুই মাধ্যমেই তার জনপ্রিয় গানের জুড়ি নেই। তাই এককথায় বলতে গেলে তিনি একাই ছিলেন একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান।
সঙ্গীত ক্যারিয়ারে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির হিসেবে করে সন্তুষ্টই ছিলেন গুণী এই সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। যদিও বারবার তিনি বলেছেন- প্রাপ্তির কথা ভেবে কখনো কাজ করেননি। আক্ষেপ ছিলো শুধু গৃহবন্দি জীবন নিয়ে।
দীর্ঘ ছয় বছর পুলিশি পাহারায় ছিলেন বুলবুল। ২০১২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আসামীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের ১৪তম সাক্ষী।
এর কিছুদিন পর (২০১৩’ মার্চে) রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশ থেকে বুলবুলের ছোট ভাই মিরাজের লাশ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। এ বিষয়ে বুলবুলের পরিবার ধারণা করেন, বুলবুল যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় তার ভাইকে খুন করা হয়।
এরপর আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সরকারের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চান। তার চাওয়া অনুযায়ী সরকার থেকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। মানে, পুলিশি পাহারায় জীবন চলতে থাকে বুলবুলের।
সেই থেকে আর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেননি বুলবুল। মাঝে কয়েকবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু এবার আর ফিরলেন না। বুকভরা চাপা দুঃখ আর অভিমান নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে রাজধানীর আফতাব নগরে নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। বর্তমানে তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
ওএফবি