বৈশাখী টেলিভিশনে শিগগিরই শুরু হচ্ছে নতুন তিনটি ধারাবাহিক নাটকের প্রচার। ধারাবাহিক ৩টি হচ্ছে ‘পাথরের কান্না’, ‘তাল বেতাল’ ও ফোর্থ ক্লাস সোসাইটি।
পাথরের কান্না
সীমান্তবর্তী জাফলং প্রকৃতির এক লীলাবূমি। সৃষ্টিকর্তা যেন জাফলংকে নিজহাতে সাজিয়েছেন। সীমান্তের পিয়াইন, রাম্বপানি, বল্লা ও সাচি নদী জাফলংয়ের সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখানকার মানুষের প্রধান পেশা নদী থেকে পাথর তুলে স্থানীয় ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করা। এদের জীবনের সুখ-দুখ হাসি কান্নার গল্প নিয়ে ধারাবাহিক পাথরের কান্না।
নাটকে এসেছে পৈত্রিক সূত্রে বিত্তবান কলিম উদ্দিন। তার ছেলে রবি ও মেয়ে শান্তা। পাশাপাশি রবির প্রেমিকা দরিদ্র ঘরের শিক্ষিত ও প্রাণচ্ছল সোহাগী। কিন্তু রবির সঙ্গে বিয়ে না হওয়ায় তার বাবা মারা গেলে সেও মানসিক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। পান ও পাথরের কেনা বেচা করা দালাল বিল্লাল ও তার প্রেমিকা ঝুমুর। সেও একসময় মহাজনদের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মেরে ঝুমুরের হৃদয়কে ভেঙ্গে উধাও হয়। বল্লা পাড়ের আরেক চরিত্র ফুল। সেও এক ট্রাক ড্রাইভারকে ভালবাসে। কিন্তু বিবাহিত লম্পট চরিত্রের মোর্শেদ ফুলের সাথে ভালবাসার অভিনয় করে, ফুলকে সর্বনাশ করে চম্পট দেয়। এভাবে নাটকে এসেছে আরো অনেক চরিত্র। সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই জাফলং এর পাথরের মতোই কিছু চরিত্রের কারনে সুখ-শান্তি, ভালবাসা ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। হরমুজের মৃত্যু, সোহাগীর পাগলপ্রায় অবস্থা, ঝুমুরের একাকীত্ব, ফুলের করুণ পরিণতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় ধারাবাহিক পাথরের কান্না। ধারাবাহিকটি রচনা করেছেন-মোহাম্মদ হারুন অর রশূদ। পরিচালনা- আল হাজেন। অভিনয় শিল্পীরা হলেন- ফজলুর রহমান বাবু, চঞ্চল চৌধুরী, মান মিলন, আরফান আহমেদ, মম মোর্শেদ, তমালিকা, নাদিয়া, আলভী, রাহা, শাহনাজ খুশি, রহমত আলী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, রিফাত চৌধুরী, আহসানুল হক, ডলি জহুর, রুমি, মিঠু, সজ্ঞিব, শামীম।
তাল বেতাল
ধারবাহিক নাটক ‘তালবেতাল’ রচনা করেছেন মেহেদী বিন আশরাফ। পরিচালনায় রয়েছেন আলম আশরাফ। এই প্রথম বাংলাদেশের কোন ধারাবাহিক নাটকের অভিনেতা অভিনেত্রী তাদের স্ব স্ব নামে অভিনয় করেছেন এবং ধারাবাহিকটিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের সকল সুপ্রতিষ্ঠিত অভিনয়শিল্পীরা অভিনয় করছেন।
এতে কাহিনীধারায় দেখা যায়, মোশাররফ করিম তার ব্যবসায়িক পার্টনারের কাছ থেকে প্রতারণার স্বীকার হয়ে ঢাকায় চলে আসে। সর্বশান্ত হয়ে সে পেটের তাগিদে এমন এক পেশা বেছে নেয় যার জন্য সে নিজেও অনুতপ্ত। বিভিন্নভাবে বাটপারি করে সে মানুষের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাক্রমে তার সাথে পরিচয় ঘটে হিল্লোলের সাথে, যে কিনা তার প্রেমিকা মিম এর খোঁজে ঢাকায় আসে। হিল্লোল মলম পার্টির খপ্পরে পরে ট্রেনে তার ব্যাগ, টাকা পয়সা হারায়। তাদের সাথে পরিচয় ঘটে বাইক চালক মেহেদীর সাথে, যে কিনা ঢাকা শহরে বাইকে যাত্রী সেবা প্রদান করে, বিনিময়ে ভাড়া পায়। মেহেদীর মাধ্যমে তাদের থাকার স্থান হয় কচি খন্দকারের বাসায়। কচি খন্দকারের বাড়ির ২য় তলায় একটি মহিলা হোস্টেল আছে। যেখানে থাকে মিম, যার খোঁজে ঢাকায় আসে হিল্লোল। মিম ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ে। সে টিউশনি করে তার খরচ যোগায়। এই হোস্টেলে থাকে জেনি, যে সারাদিন কবিতা নিয়ে পরে থাকে। তার লক্ষ্য বিখ্যাত কবি হওয়া। তানজিকা নামের আরেক হোস্টেল বাসিন্দা সারাদিন রূপচর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সনি নামের আরেক বাসিন্দা খেতে ভালোবাসে, আর মুনিয়া সারাক্ষণ বই নিয়ে পরে থাকে। মানুষের জীবন কখনো একই ছন্দে চলতে পারেনা, মাঝে মাঝে ছন্দপতন ঘটে। আমাদের নাটকের চরিত্রগুলোও ব্যতিক্রম নয়। তাই নাটকটির নাম ‘তাল বেতাল’ রাখার স্বার্থকতা।
এতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, আদনান ফারুক হিল্লোল, বিদ্যা সিনহা মীম, আ খ ম হাসান, জেনী, তানজিকা, ঈশানা, কচি খন্দকার, রিফাত চৌধূরী, রাশেদা চৌধূরী, ডিকন নূর, জুই, তারেক মাহমুদ প্রমুখ।
ফোর্থ ক্লাস সোসাইটি
রওনক হাসানের মূল ভাবনায় নওমী কামরুন বীধুর রচনায় ধারাবাহিক নাটক ‘ফোর্থ ক্ল্যাস সোসাইটি পরিচালনা করেছেন সাইফ চন্দন।
এ শহরে বাড়ছে মানুষ লক্ষ থেকে কোটি কোটি। এদের মধ্যে কেউ ফার্স্ট ক্লাস, কেউ সেকেন্ড ক্লাস, আর কেউ ফোর্থ ক্লাস। গল্পের শুরুটা এই ফোর্থ ক্লাসকে কেন্দ্র করেই। দারোয়ান, ড্রাইভার, সুইপার, দুধওয়ালা, মুচি, সবজী ওয়ালা, পেপারওয়ালা ও বাসাবাড়িতে কাজ করা লোকজনের স্থান এপার্টমেন্টের নিচে গ্যারেজেই। আর এখানেই গড়ে উঠে ফোর্থ ক্লাস সোসাইটি। আর ফ্ল্যাটগুলোর কোনরকম বিপদ-আপদ বা চুরি-ডাকাতির সবখানেই রয়েছে এ ফোর্থক্লাসের ভূমিকা। কখনো তারা পজেটিভ, আর কখনও ন্যাগেটিভ। সবমিলিয়ে নাটক ফোর্থ ক্লাস সোসাইটি।
এতে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, রওনক হাসান, শাহেদ শরীফ খান, জয়রাজ, সাজু খাদেম, বন্যা মির্জা, নাদিয়া, মৌসুমী বিশ্বাস, কল্যাণ, রথি, ঋতু সাত্তার, পিয়াল, টুনটুনি, হোমায়রা হিমু, শ্যামলী, নিসাসহ আরও অনেকেই।
বাংলাদেশ সময় ১৫৩০, ডিসেম্বর ২০, ২০১১