আপনি কেন একজন পরিচালকের প্রফেশন বেছে নিলেন?
তানভীর আহসান: আমি আসলে রাইটার হতে চেয়েছিলাম। তবে, ফিল্ম এপ্রিসিয়েশন করতে গিয়ে ডিরেকশনে চলে আসি।
আপনি পরিচালক হওয়ার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি কী পছন্দ করেন?
তানভীর আহসান: আমার মতে এ পেশায় কাজ করার ভালো দিকটা হচ্ছে প্রত্যেকটা শুটিং-ই আসলে এক-একটা জার্নি। এ জার্নিতে আমার অনেক মানুষ সম্পর্কে জানা ও হাজারো ঘটনার সঙ্গে পরিচিত হতে ভালো লাগে। আর শুটিংটা আমার খুব পছন্দের কাজ। আমাকে সারাদিন শুটিং করতে দিলে আমি খুশি মনে শুটিং করতাম।
সাম্প্রতিক কোনো কাজ আছে কি যা আপনার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি?
তানভীর আহসান: সম্প্রতি একটা প্রোজেক্ট করেছি নেসলের সঙ্গে ১৬ই ডিসেম্বর ঘিরে। যখন কিঙ্কর ভাই আর উশান ভাই প্রথমবার আমাকে স্ক্রিপ্টটা দেন তখন থেকেই আমার এক্সাইটমেন্ট শুরু হয় এ গল্পটা নিয়ে। কারণ, এটা একটা ছেলের জার্নি তার বাবার কাছে। তার বাবা আসলে একজন অনেক বড় মানুষ। আর এই জার্নিটা আসলে বিষাদের একটা জার্নি, কারণ তিনি তার বাবার মরদেহ দাফনের জন্য যাচ্ছেন। যেহেতু আমার ছবি ভালো লাগে আর স্পেস ভালো লাগে – এর থেকে সুন্দর স্পেস আসলে গল্প বলার জন্য হতে পারে না। এই সূত্রে খুঁজে পাই তাহিরপুর, টেকেরঘাট। তাহিরপুরে ১৯৭১ সালে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। শহীদের সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারবো না, কিন্তু ওখানে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা কবরস্থানও আছে।
একজন ডিরেক্টর একটা সুন্দর গল্পের জন্য মুখিয়ে থাকে। প্রথমত, এটার স্ক্রিনপ্লেটা খুব সুন্দর ছিল। দ্বিতীয়ত, আইডিয়াটা খুব সিম্পল, কিন্তু সুন্দর ছিল। তৃতীয়ত, এটায় স্কোপ ছিল সুন্দর-সুন্দর ছবি তৈরি করার। এ তিনটা জিনিস যেই গল্পে থাকে সেই গল্প এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
শুটিংয়ের কোনো স্মরণীয় ঘটনা যা আপনি বলতে চান-
তানভীর আহসান: সব শুটেই কিছু না কিছু মেমোরেবল এক্সপেরিয়েন্স থাকে। এ শুটে যিনি সিনেমাটোগ্রাফার ছিলেন, তিনি সাদিক আহমেদ। তার কাজ আমি আগে স্ক্রিনে দেখেছিলাম। তার সঙ্গে এই প্রথমবার কাজ করেছি। এবার তার সঙ্গে কাজ করে তার কাজের ব্যাপারে যে ধারণাটা আমার হয়েছে সেটাই বলতে গেলে আমার অন্যতম বড় পাওয়া। তার উপর এই কাজটি করতে গিয়ে আমার কথা হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে। তাদের মুখে ৭১-এর গল্প শোনাটাও আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।
বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে কিছু বলতে চান?
তানভীর আহসান: আমরা আসলে ভুলে যাই, এই দেশের বিজয় এসেছে কত কষ্টের বিনিময়ে, কত ত্যাগের বিনিময়ে। আমরা আমাদের এই প্রজন্ম যা খুশি করে যাচ্ছি; কখনো এই ত্যাগের ব্যাপারে আমরা ভেবেও দেখি না। আমাদের উচিত বাইরের দেশগুলোর কাছে আমাদের ইমেজটা ধরে রাখা, আর দেশটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এমকেআর/আরআইএস