ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

নাটক ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ নিয়ে বিতর্ক, পরিচালকের ব্যাখ্যা

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২০
নাটক ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ নিয়ে বিতর্ক, পরিচালকের ব্যাখ্যা ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ নিয়ে বিতর্ক, পরিচালকের ব্যাখা

গত ৯ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হয় নাটক ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’। স্ম্যাক আজাদের পরিচালনায় নাটকটি টিভি চ্যানেলে প্রচারের পর ভিজ্যুয়াল সিন এন্টারটেইনমেন্ট’র ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত করা হয়। 

এরপর নাটকটি ব্যাপক সাড়া ফেললেও নামের জন্য নেতিবাচক দৃষ্টি পড়ে নোয়াখালীর মানুষের। সেটি গড়ায় মামলায়।

হ্যাঁ, ৩০ ডিসেম্বর নির্মাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে জনৈক সাইফুর রহমান রাসেল।  

মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, এই নাটকের মাধ্যমে নোয়াখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিকৃত করে সমগ্র নোয়াখালীর মানুষকে চরমভাবে অপমানিত করা হয়েছে। মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজ কিংবা লিগ্যাল নোটিশ এখনো পরিচালক-প্রযোজকের হাতে এসে পৌঁছায়নি। তবে নোয়াখালীবাসিরা নাটকটি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা প্রকাশ করার পর গত ২৯ ডিসেম্বর কনটেন্টটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।  

এ প্রসঙ্গে নাটকের পরিচালক স্ম্যাক আজাদ বলেন, এই মামলার খবরটি আমি একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে পেয়েছি। কিন্তু মামলা হওয়ার আগেই আমার প্রযোজক নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলেছেন। এরপরও কেনো মামলা হলো, সেটি বোঝতে পারছি না। আমরা এখনো কোনো লিগ্যাল নোটিশ পাইনি। তারপরও আমার পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও অন্যান্যদের কাছ থেকে প্রচুর ফোন পাচ্ছি। কেউ কেউ হুমকি ধামকিও দিচ্ছে।  

আসলে নোয়াখালী বিভাগ চাই নাটকটি একটি কমেডি নাটক। যেটি দর্শককে বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়েছে। এখানে কাউকে ছোটো বা কোনো সংস্কৃতিকে বিকৃত করার চেষ্টা ছিল না। কনটেন্ট’র শুরুতে আমরা এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাও ছিল। এরপরও এই নাটকটির কারণে নোয়াখালীর মানুষ যদি অপমানিতবোধ করে থাকেন, তাহলে আমি আমার নাট্যকার, প্রযোজক, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ করছি। এখনো পর্যন্ত যে অবস্থার তৈরি হয়েছে, সেটি একেবারেই অনিচ্ছাকৃত।

পরিচালক আরও বলেন, অনেকেই বলেছেন নোয়াখালীকে খাটো করার জন্য পুরোপুরি বাণিজ্যিক উদ্দেশে এটি নির্মিত হয়েছে। প্রথম ব্যাপারটি এর মধ্যেই ব্যাখ্যা করেছি। নোয়াখালীকে খাটো করার কোনো ইচ্ছা বা উদ্দেশ আমাদের ছিল না। পুরান ঢাকা, বরিশাল, পাবনার ভাষার মতো করে আমরাও একটি কমেডি কনটেন্ট নির্মাণ করতে চেয়েছি। আমাদের গল্পের মূল চরিত্র নোয়াখালি আর শুদ্ধের মিশ্রণে কথা বলে।  

তাই এখানে হয়তো খানিকটা বিভ্রান্তি চোখে পড়েছি। যেটি  গল্পের প্রয়োজনে এবং কোনোটাই ইচ্ছাকৃত নয়। অন্যদিকে নায়িকার মুখ থেকে নোয়াখালীবিদ্বেষ দেখানোর যে অভিযোগ, সেটি ঠিক নয়। কারণ গল্পের শেষে নায়িকা নিজেই সব মেনে নিয়ে নোয়াখাইল্যা ভাষা পর্যন্ত বলেছে। সেই সঙ্গে নায়ককে নোয়াখালী বিভাগ চাই আন্দোলন অব্যাহত রাখার অণুপ্রেরণাও দিয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বড় ভাইয়ের চরিত্রটি একটি প্রতীকী চরিত্র। এখানে নির্দিষ্ট কাউকে ছোট করার চেষ্টা করা হয়নি। গল্পের দুষ্টু চরিত্র হিসেবে একজনকে চিত্রায়িত করা হয়েছে।  

অন্যদিকে নায়কের ভাষা, কবিতা উচ্চারণসহ অন্যান্য বিষয়গুলো একেবারেই নিছক হাস্যরস সৃষ্টির জন্য করা। ফলে কোনোটাই নির্দিষ্ট কাউকে ছোট করার জন্য করা হয়নি। নাটকের পরিচালক নোয়খালীবাসি ও দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

রণক ইকরামের রচনায়, স্ম্যাক আজাদের পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন- ফারহান আহমেদ জোভান, তাসনিয়া ফারিন, সিয়াম নাসির, তানজিম হাসান অনিক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।