জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিশিষ্ট অভিনেতা, নাট্য পরিচালক ও মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান দিলু। করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ৭০ ভাগ ছাড়িয়ে গেছে।
ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা এ অভিনেতার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসক বলছেন, পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও এসব করোনা আক্রান্তের উপসর্গ এবং সাইটোকাইন স্ট্রোম বয়ে যাচ্ছে তাঁর শরীরে।
বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের ‘সংশপ্তক’ নাটকে বড় মালু চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন মজিবুর রহমান দিলু। অনেকে তাঁকে বড় মালু নামেই চেনেন।
তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক হচ্ছে ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ প্রভৃতি। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাটক ‘তথাপি’, ‘সময় অসময়’ ও ‘সংশপ্তক’–এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন মজিবুর রহমান দিলু।
দিলু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঢাকার ড্রামা নামে একটি নাট্যগোষ্ঠী। নাট্যকার আতাউর রহমান তাঁর বড় ভাই।
স্কুলে পড়ার সময়ই স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে যে মিছিলে গুলিতে আসাদ শহীদ হয়েছিলেন সেই মিছিলে ছিলেন দিলুও। ১৯৭০ সালে মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েই যুদ্ধে চলে যান তিনি। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে ঢাকায় সরাসরি রণাঙ্গনে ছিলেন তিনি। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ছিলেন সেকেন্ড ইন কমান্ড। সেসময় তিনি ঢাকায় কয়েকটি দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) মজিবুর রহমান দিলুর স্ত্রী রানী জানান, গুলেন বারী সিনড্রোমে (জিবিএস) আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ বছর বেকার ছিলেন দিলু। দুই ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার চলছিল কোনমতে। তারা এখন চরম আর্থিক সংকটে আছেন। এই মুহূর্তে আইসিইউর খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিবারের পক্ষে জরুরী ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তা কামনা করেছেন। একইসঙ্গে সামর্থ্যবানদের কাছে আর্থিক সহায়তা এবং সকলের দোয়া কামনা করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২১
ওএফবি