কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাকের ৮০তম জন্মদিন শনিবার (২৩ জানুয়ারি)। ষাটের দশকে নির্মাতা সালাউদ্দিনের ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রের একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢালিউডে যাত্রা শুরু হয় তার।
এই দিনে চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ শোবিজের নানা অঙ্গনের মানুষ নায়করাজকে স্মরণ করছেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক। তার পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে রাজ্জাকের। নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে। এতে তার নায়িকা সুচন্দা। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই কিংবদন্তি।
‘অবুঝ মন’, ‘আলোর মিছিল’ ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘রংবাজ’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’ ‘পিচঢালা পথ’, ‘অশিক্ষিত’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে রাজ্জাক সমৃদ্ধ করে গেছেন ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি।
মোট ৩০০টিরও বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নায়করাজ। তার নিজের হাতে গড়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন।
১৯৭৭ সালে ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। রাজ্জাক প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন।
সেরা অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ‘কার্তুজ’ চলচ্চিত্রে রাজ্জাককে শেষবার দেখা যায়।
তিনি ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার সঙ্গে (লক্ষ্মী) বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির সন্তান রেজাউল করিম (বাপ্পারাজ), খালিদ হোসেইন (সম্রাট), নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না। বাপ্পারাজ ও সম্রাটও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছেন।
চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ রাঙিয়ে গেছেন রাজ্জাক। জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলেন বলে ‘নায়করাজ’ উপাধি পেয়েছেন। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট রাজ্জাকের মৃত্যুর মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। .
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
জেআইএম