ঢাকাই সিনেমায় নন্দিত চিত্রনায়িকা শাবনূর জীবনের আরেকটি বসন্ত পার করেছেন। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) ৪৩ বছরে পা দিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস করছেন শাবনূর। সেখানে ছেলে আইজান, মা, ভাই, বোনসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি। জন্মদিনের বিশেষ দিনটিতেও অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন তিনি।
জন্মদিনের পরিকল্পনার বিষয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, জন্মদিন নিয়ে পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে আর হয়ে ওঠেনি। তাই এবারের জন্মদিনটা পরিবারের সঙ্গেই উদযাপন করছি।
তিনি আরও বলেন, আমার পূর্ণ মনোযোগ একমাত্র সন্তান আইজেনের দিকে। তাকে একজন সত্যিকারের মানুষ হিসাবে গড়ে তুলাই আমার স্বপ্ন। আমার সেই স্বপ্নটা যেন মহান আল্লাহ পূর্ণ করেন, এ দোয়া চাই সবার কাছে।
শাবনূরের পারিবারিক নাম কাজী শারমীন নাহিদ নূপুর। ১৯৭৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে শাবনূরের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে প্রয়াত নির্মাতা এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। এই চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় করেন সাব্বির।
১৯৯৪ সালে জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে সালমান শাহ’র বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন শাবনূর। এই চলচ্চিত্রটির পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই অভিনেত্রীকে। একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন ঢালিউডের এই ‘স্বপ্নের নায়িকা’।
সালমান শাহ’র ২৭টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৪টিতেই জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনূর। তাদের জুটি ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি। তাদের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই দর্শক নন্দিত ও ব্যবসাসফল। সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, মান্না ও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হয়েছেন শাবনূর।
২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে ঘর বাঁধেন শাবনূর। তবে বনিবনা না হওয়ায় ২০২০ বছর ২৬ জানুয়ারি তাদের বিচ্ছেদ হয়।
সবশেষ ২০১৫ সালে ‘পাগল মানুষ’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল শাবনূরকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় উপস্থিত হননি দর্শকপ্রিয় এ তারকা। সিনেমা থেকে সাময়িক দূরত্ব তৈরি হলেও এ অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পড়েনি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাবনূর ১৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ভালোবেসে বউ আনবো’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘পৃথিবী তোমার আমার’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘আমি তোমারি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘নারীর মন’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিঁড়ে’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘এ মন চায় যে’, ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেব’, ‘দিল তো পাগল’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘শ্বশুর বাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘সুন্দরী বধু’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘নসিমন’, ‘ব্যাচেলর’, ‘ফুলের মত বউ’, ‘চার সতীনের ঘর’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘নিরন্তর, ‘আমার প্রাণের স্বামী’ ইত্যাদি।
২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবনূর। এছাড়া ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রের জন্য ২০০৩ সালে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন এই অভিনেত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১
এনএটি