বিশ্ব সংগীত দিবসে মঙ্গলবার (২১ জুন) শ্রোতা-দর্শকদের জন্য নতুন গান উপহার দিয়েছে কোক স্টুডিও বাংলা। ইউটিউবের পাশাপাশি তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক থেকে নতুন গানটি শেয়ার করা হয়।
লালন সাঁইজী ও ভারতীয় সাধক কবি কবির দাসের লেখা দুটি গানের সমন্বয়ে কোক স্টুডিও নতুন গানের শিরোনাম করা হয় ‘সব লোকে কয়’। এখানে ‘সব লোকে কয়’ অংশটি গেয়েছেন কানিজ খন্দকার মিতু।
তার অংশের সঙ্গে ভারতীয় ফোকের মিশ্রণে ফিউশন তৈরি করা হয়েছে। এই অংশের শিরোনাম ‘কবিরা কুয়া এক হ্যায়’। গেয়েছেন ভারতের মুর্শিদাবাদী। গানটি প্রযোজনার পাশাপাশি সংগীতায়োজন করেছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব।
এই গানটি প্রকাশের পর ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই কানিজ খন্দকার মিতুর গায়কীর প্রশংসা করেছেন। আবার অনেকেই জানতে চাইছেন তার সম্পর্কে।
বুধবার সকালে কথা হয় কানিজ খন্দকার মিতুর সঙ্গে। গানটি ইউটিউবে আসার পর থেকেই শুভেচ্ছায় ভাসছেন তরুণ এই শিল্পী। তাই শুরুতেই তাদের কৃতজ্ঞতা জানালেন, যারা তার গানটি শুনছেন, শেয়ার করছেন এবং আলোচনা করছেন।
মিতু আরো বলেন, কোক স্টুডিওর মতো এত বড় প্ল্যাটফর্মে লালন সাঁইজীর গান করতে পেরেছি এটি আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। এ জন্য প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই অর্ণবদার প্রতি। তিনি না থাকলে এই সুযোগটি পাওয়া হতো না। পাশাপাশি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই আমার ওস্তাদ গোলাম রাব্বানী রতনের প্রতি। তিনি আমার পাশে ছায়ার মতো না থাকলে হয়তো এতদূর আসা সম্ভব হতো না। এছাড়াও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়) সংগীত বিভাগের সকল শিক্ষকদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মিতুর জন্ম টাংগাইলের ভূঞাপুর থানার গোবিন্দাসীতে। শৈশব-কৈশর কেটেছে সেখানেই। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই গানের মধ্যে বেড়ে ওঠা তার। গানের হাতেখড়ি হয়েছিল স্থানীয় ওস্তাদ সেলিম পারভেজের কাছে। এরপর দীর্ঘদিন তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ গোলাম রাব্বানী রতনের কাছে। এছাড়াও বিভিন্ন ওস্তাদের কাছে গানের তালিম নিয়েছেন তিনি।
মিতু স্বপ্ন দেখতেন গান নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। তার স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপটি শুরু হয় সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘মেঘে ঢাকা তারা’য় অংশ নিয়ে। ২০১১ আয়োজিত এটিএন বাংলায় প্রচারিত এই আয়োজনে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি।
মিতুর এই অবস্থানের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ অধ্যবসায়। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে এইচএসসির পর পড়াশোনা শুরু করেন সংগীতের ওপর। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন মিতু। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত তিনি।
এসক তথ্য জানানোর সঙ্গে নিজের পরিকল্পনার কথাও জানান মিতু। তিনি জানান, কোক স্টুডিওর গানের মাধ্যমে যে পথচলা শুরু হলো, এই যাত্রায় কণ্ঠ, সুর, তাল আর লয়কে মুঠোবন্দি করে পাড়ি দিতে চানঅসীম দূরত্ব। চান মনের আনন্দে গান করে যেতে।
সবশেষ মিতু বলেন, জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে গান দিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন ভালো কিছু গান উপহার দিতে পারি৷
বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
এনএটি