ঢাকা: ২০১৬ সালে ‘আইসক্রিম’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে অভিনেতা শরিফুল ইসলাম রাজের। এরপর ওয়েব ফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’তে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন তিনি।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে শরিফুল রাজের সিনেমা ‘পরাণ’। এতে তিনি অভিনয় করেছেন রোমান চরিত্রে। সম্প্রতি ‘গুণিন’খ্যাত এই অভিনেতা মুখোমুখি হয়েছেন বাংলানিউজের। তার সঙ্গে আলাপের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
বাংলানিউজ: ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা দেখা যায়, প্রথমবার ঈদে আপনার সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, বিষয়টা কেমন লাগছে?
শরিফুল রাজ: ঈদে সিনেমা এলে একটা প্রতিযোগিতার ব্যাপার থাকে, বড় প্রোডাকশন হাউসগুলো চাপে থাকে। এটা আসলে আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো, কারণ যখন একটা সিনেমার সঙ্গে অন্য আরেকটা সিনেমার প্রতিযোগিতা হয়, তখন আরো অনেক কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি এটা নিয়ে খুবই আশাবাদী, আশা করব এটা নিয়মিত হোক।
বাংলানিউজ: ‘পরাণ’-এ আপনি রোমান, এই চরিত্রটি কেমন?
শরিফুল রাজ: এই চরিত্রটা একটু পাগলাটে, নেশাগ্রস্ত, প্রেমিকার জন্য মরিয়া ও উদ্ভট আচরণের এক যুবকের। প্রেক্ষাগৃহে দর্শক চরিত্রটি দেখে মজা পাবেন। আর রাফি (‘পরাণ’র পরিচালক রায়হান রাফি) চরিত্রটাকে সিনেমায় বেশ ভালোভাবে নিয়ে আসছেন।
বাংলানিউজ: রায়হান রাফির পরিচালনায় বিদ্যা সিনহা মিম ও ইয়াস রোহানের সহশিল্পী হিসেবে প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শরিফুল রাজ: ইয়াসের সঙ্গে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ মুক্তি পেয়েছে, তবে আগে শুটিং করেছিলাম ‘পরাণ’র। আমি একদম নতুন একটা ছেলে, আর মিম আমাদের দেশে একজন তারকা শিল্পী, শুটিংয়ের সময় তাই ভয় পাচ্ছিলাম, ও আমাকে সেভাবে সহযোগিতা করে কিনা। কিন্তু মিম আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সেটা দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি। আমার পরিচালক ও সহশিল্পীদের সহযোগিতা ছাড়া আমি আসলে রোমান চরিত্রটা করতে পারতাম না। এর পুরো কৃতিত্ব আমার ‘পরাণ’ টিমের।
বাংলানিউজ: প্রথমবার বাবা হতে যাচ্ছেন, এই অনুভূতিটা কেমন?
শরিফুল রাজ: এটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। অন্যরকম একটা উত্তেজনা কাজ করছে। এমন অনুভূতি এর আগে কখনো হয়নি।
বাংলানিউজ: আগে থেকে কি সন্তানের নাম ঠিক করে রেখেছেন?
শরিফুল রাজ: আমরা ছেলে এবং মেয়ে দু’টারই নামের তালিকা করে রেখেছি। তবে নামটা পরী ঠিক করবে। দেখা যাক কী হয়।
বাংলানিউজ: সংসার কেমন যাচ্ছে?
শরিফুল রাজ: জোস। আসলে পরী যে এত গোছালো, সেটা আমি আগে থেকে জানতাম না। ও ছোট ছোট বিষয়ে অনেক গোছালো কিন্তু আমি একদম উল্টো। আমার জীবনটা পুরোপুরি গুছিয়ে দিয়েছে। ওকে সামনাসামনি এভাবে দেখে মাঝেমাঝে বিব্রত হই। আমি ভাগ্যবান, ওর মতো পার্টনার আমার জীবনে পেয়েছি।
বাংলানিউজ: পরীর কোন বিষয়টা দেখে তাকে ভালোবেসেছেন?
শরিফুল রাজ: ও মানুষ হিসেবে সবার থেকে আলাদা। ওর মানবিকতা বোধও একটু অন্যরকম। আসলে সবাই যেমন ভাবেন ও তেমন না। ওকে কাছাকাছি দেখাটা আমাকে ভালোবাসতে ইনস্পায়ার করেছে।
বাংলানিউজ: পরীমনিকে নিয়ে অনেক ধরনের বিতর্ক রয়েছে, আলোচনা হয়েছে- আপনি যখন তাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন এসব নিয়ে কে কী বলবে সেই বিষয়গুলো মাথায় কাজ করেছিল?
শরিফুল রাজ: আমি এসব বিষয় একদমই কেয়ার করি না। কে কী ভাববে- সেটা ভেবে যদি আমার সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তাহলে মানুষ হিসেবে এটা হলো না। আসলে এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে হয়েছে।
বাংলানিউজ: আপনাদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যখন নানা নেগেটিভ মন্তব্য দেখেন, তখন কি কষ্ট লাগে?
শরিফুল রাজ: মাঝে মাঝে খুব কষ্ট লাগে। কারণ আমার মনে হয়, তাদের ঘরে মাও নেই বোনও নেই। আসলে মানুষকে মানুষ হিসেবে বিচার করে মন্তব্য করা উচিৎ। মনে চাইলো ফেসবুকে কারো পোস্টে ঢুকে একটা মন্তব্য করে চলে এলাম, আনন্দ পেলাম; এটা বড় ক্রেডিটের জিনিস না, এটা খুব খারাপ জিনিস। মানুষের চিন্তাভাবনার জায়গাটা একটু পরিবর্তন করা উচিৎ।
বাংলানিউজ: পরীমনির জীবনে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা হওয়ার পর যখন তিনি ফিরে এলেন, তখন আপনারা বিয়ে করেছেন। এই বিষয়টা নিয়ে আপনি পারিবারিকভাবে কোনো সমস্যায় পড়েছিলেন?
শরিফুল রাজ: পারিবারিকভাবে ওভাবে জটিলতায় পড়তে হয়নি। যখন বিয়ের প্রক্রিয়া শুরু করি, ও বাসায় গিয়ে আমার আম্মুকে পটিয়ে ফেলে। আম্মাও ওকে খুব পছন্দ করেন। পরিবার আমাদের খুব সাপোর্ট করে। এর জন্য আব্বা-আম্মাকে অনেক ধন্যবাদ।
বাংলানিউজ: পরীকে সবচেয়ে দামি উপহার কী দিয়েছেন?
শরিফুল রাজ: ওকে সারাক্ষণ সময় দিই এটাই সবচেয়ে বড় উপহার, ওর সঙ্গে সারাজীবন থাকতে চাই এটাই বড় উপহার এবং ওকে আজীবন ভালোবাসতে চাই এটাই সবচেয়ে বড় উপহার।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
জেআইএম