খুলনা: রৌদ্রোজ্জ্বল শ্রাবণের আকাশ। প্রচণ্ড রোদের তাপদাহে ঘেমে নেয়ে একাকার।
দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। লাইন ধরে হলে প্রবেশ করছেন তারা। বলতে গেলে দর্শকদের বাঁধভাঙা জোয়ার।
বৃহস্পতিবার (৪আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রথম শোতে‘হাওয়া’ সিনেমা দেখতে আগে আগেই চলে এসেছেন অনেকে। খুলনার লিবার্টি সিনেমা হলের এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সিনেমা হলের টিকিট বিক্রেতারা বলেন, হাওয়া সিনেমা নিয়ে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা মাঝে উন্মাদনা দেখা দিয়েছে। সিনেমার পোস্টার, ট্রেলার ও গান প্রকাশের পর সেগুলো লুফে নিয়েছেন সবাই। ২৯ জুলাই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ভিড় লেগে আছে। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে সিনেমা হলে।
লিবার্টি হলে হাওয়া সিনেমা দেখতে আসা জবঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পলাশ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, জেলেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ঝড়-তুফান ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সমুদ্রে মাছ ধরেন। জেলেদের সেই সংগ্রামী জীবনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে হাওয়া সিনেমায়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত কোনো সিনেমা মুক্তি পাওয়া মানেই একটা অন্যরকম উন্মাদনা কাজ করে। হাওয়া সিনেমাটি মুক্তির পূর্বেই দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সিনেমাটি দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাওয়া সিনেমা দেখার টিকিট পাচ্ছিলেন না। যে কারণে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ শিক্ষার্থীকে টিকিট উপহার দিয়ে একসঙ্গে লিবার্টি সিনেমা হলে ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করেছি।
সিনেমা দেখতে আসা সরকারি বিএল কলেজের শিক্ষার্থী নাদিয়া ইসলাম বলেন, সিনেমার গান সাদা সাদা কালা কালা মুক্তির পরই ঝড় তোলে। রাতারাতি পরিণত হয় গণমানুষের গানে। এ সিনেমার টিকিট পাওয়া খুবই কষ্টকর। অনেক কষ্টে টিকিট পেয়েছি। সিনেমাটি আজ দেখতে এলাম। খুব ভালো লাগছে।
খুলনার ১৩টি হলের মধ্যে চারটিতে সিনেমা চলছে। এগুলো হলো, শঙ্খ সিনেমা হল, সঙ্গীতা সিনেমা হল , লিবার্টি সিনেপ্লেক্স ও চিত্রালী ডিজিটাল সিনেমা হল।
হাওয়া সিনেমা চলছে শঙ্খ সিনেমা হলেও। সেখানে স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন এমনকি পরিবারের অন্যরা এবং বন্ধু-বান্ধব মিলে সবাই একসঙ্গে সিনেমা দেখতে ভিড় করছেন। চিত্রালী ডিজিটাল সিনেমাহলে চলছে পরাণ সিনেমাটি। সেখানে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়।
হল মালিকরা বলছেন, বাংলা সিনেমার দর্শক যে এখনো ফুরিয়ে যায়নি, সেটা আবারও প্রমাণ হলো। এভাবে দর্শকদের ভালো সিনেমা উপহার দিতে পারলে তারা অবশ্যই সিনেমা হলে নিয়মিত আসবেন। তাই এখন ভালো সিনেমা বানানোর বিকল্প নেই।
শঙ্খ সিনেমাহলের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, হাওয়া সিনেমা দেখতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় লেগে আছে। দীর্ঘদিন পর হলে দর্শকরা খরা কেটেছে।
চিত্রালী ডিজিটাল সিনেমা হলের পরিচালক তপু খান বাংলানিউজকে বলেন, খুলনায় শুধুমাত্র আমাদের সিনেমা হলেই চলবে পরাণ ছায়াছবি।
তিনি জানান, প্রতিদিন আমাদের তিনটি শো প্রদর্শিত হয় সকাল ১১ টা, দুপুর ৩ টা ও সন্ধ্যা ৬ টায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২২
এমআরএম/এসআইএস