ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

তখন হয়তো এই বোধ জাগ্রত হয়নি, যেটা এখন বুঝি: তুষি

নাজমুল আহসান তালুকদার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
তখন হয়তো এই বোধ জাগ্রত হয়নি, যেটা এখন বুঝি: তুষি নাজিফা তুষি

নির্মাতা রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় অভিনেত্রী নাজিফা তুষির। এর মধ্যে তিনি ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ওয়েব ফিল্মে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন।

তবে চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা ‘হাওয়া’র সফলতা ক্যারিয়ারে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে তাকে। এই সিনেমায় তীক্ষ্ণ চোখের চাহনির ‘গুলতি’ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি।

মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত এই সিনেমাটি দেশে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। গেল ৫ নভেম্বর মুক্তির শততম দিনও পালন করেছেন সিনেমাটির সংশ্লিষ্টরা। সেই অনুষ্ঠানের ফাঁকে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তুষি।

‘হাওয়া’ সিনেমায় গুলতি চরিত্র যেভাবে মানুষের মনে গেঁথে গেছে, সেই জায়গা থেকে নতুন চরিত্রে যুক্ত হয়ে উন্নতি করা কঠিন হবে বলেই মনে করেন তুষি।  

এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, গুলতি থেকে বের হতে অনেক সময় লেগেছে। এটা চার, পাঁচ বছর আগের একটা জার্নি। আমার অনুভূতি- কোন চরিত্রই মরে যায় না। একটা চরিত্র যদি নিজের মধ্যে ধারণ করি, সেটার বোধ যদি নিজের মধ্যে থাকে তাহলে সেই চরিত্রের কিছু না কিছু নিজের মধ্যে থেকে যায়। যখন চরিত্রটি রিচার্জ চলছিল, গুলতি আমি হতে পারব কিনা? তখন একটাই কমেন্ট ছিল- এই মেয়েটার চোখ অনেক তীক্ষ্ণ। ওই চাহনিতেই সেই তেজি ব্যাপারটা রয়েছে। আর এই চরিত্রটি নিয়ে এত কাজ করেছি যে, এখন অন্য চরিত্র করতে গেলে ভয় লাগে। ’   

দর্শকমহলে মহলে প্রশংসিত হলেও, সিনেমাটি দেখার পর তুষির নিজের কাছে মনে হয়েছে ‘চরিত্রের উপস্থাপনে আরো উন্নতি করা যেত’।  

তার মতে, ‘এখন অনেক ভুল চোখে পড়ে। একটা কাজ করার পর কাজই থাকে সেটার ভুলগুলো খুঁজে বের করা। কাজের সময় বুঝা যায় না কোথায় আরো বেটার উপস্থাপন করা যেত। হাওয়ায় এতো সহজ চরিত্রও ছিল না, নতুন হিসেবে। আমার মনে হয়, অনেক দক্ষ অভিনেতার এ ধরনের চরিত্র করা উচিৎ। হয়তো চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা আমাকে চরিত্রটি দয়া করেছে, আর আমি পরিশ্রমী ছিলাম বলেই চরিত্রটি করতে পেরেছি। কিন্তু এখন মনে হয় অনেক কিছু করতে পারিনি। হয়তো তখন এই বোধ জাগ্রত হয়নি, যেটা এখন দেখে বুঝি। ’ 

গুলতিকে পর্দায় আরো আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তুলতে যে কাজ করতে পারতেন তুষি, এমন উল্লেখযোগ্য তিনটি কারণ জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তার মতে- প্রথমত, ভয়েজ নিয়ে আরো কাজ করা উচিৎ ছিল; দ্বিতায়ত, মেকআপের প্রতি আরো সচেতন হওয়া দরকার ছিল এবং পর্দায় আরো বোল্ট বা সাহসী ভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারতেন।  

অল্প কিছু কাজ করলেও সেগুলোর মাধ্যমেই আলোচিত হয়েছেন এই লাক্স সুন্দরী। একটি ভবনের ভিত্তি যতটা শক্ত হয় সেই ভবন ততোটাই মজবুত হয়। তুষিও হয়তো তেমনটিই মনে করেন। ভাবেন, ক্যারিয়ার আরো প্রসিদ্ধ করতে হলে শেখা বা চর্চার শেষ নেই। এর মাধ্যমে নিজের ভিত্তিটা আরো শক্ত করতে হবে। তাইতো সম্প্রতি নিজেকে আরো বলবান করতে অভিনয়ের একটি কোর্স করেছেন নাজিফা তুষি।  

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাট্যনির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ স্যারের কাছে এটা আমার থার্ড ওয়ার্কশপ ছিল। জামিল স্যার মানেই, অন্য কিছু। আমার জীবনে এই ছোট চলার পথে যে মেন্টর পেয়েছি এর মধ্যে মেজবাউর রহমান সুমন একজন। তারপর ডিটেইলে কারও কাছে শেখা সেটা অভিনয় কিংবা জীবন নিয়ে সেটা, জামিল স্যার। উনার সঙ্গে খুব অল্প সময়ের সাক্ষাৎ বা দেখা কিন্তু তার যে জীবন বোধ! সেই জায়গায় তার সঙ্গে সময় কাটানোই টাই জীবনে একটা এচিভমেন্ট। ’ 

এই অভিনেত্রী আরো বলেন, ‘অভিনয়ে চর্চা যতটা করা যায় ততোটাই মনে হয় শেখা যায়। হয়তো সামনে আরো ব্যস্ত হব তখন আর পারব না। এই ওয়ার্কশপে একটা নাটক করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, গায়ক যেমন রেওয়াজ করে অভিনয়েও মনে হয় চর্চা করা জরুরি। ’ 

‘আইসক্রিম’, ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ থেকে ‘হাওয়া’। এই যাত্রায় নতুন কী কাজ করতে যাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে তুষি বলেন, ‘কিছু কাজের কথা হচ্ছে, কিছু ফটোশুটও চলছে। নেক্সট ট্রিপটা কি হবে সেটার খোঁজে আছি। হয়তো ওটিটি কিংবা অন্য মাধ্যমে কাজ করে সার্ভাইব করতে হবে। কিন্তু সিনেমা ট্রিপের মতো, সেই উত্তেজনাটা না থাকলে কাজ করা হবে না। হাওয়া দেখে হয়তো একটু হলেও দর্শকরা ভালোলাগা প্রকাশ করছেন বা কোন একটা জায়গায় পোক করেছেন। কেউ যদি এমন কোন ট্রিপে আবার নিয়ে যায় সেই অপেক্ষায় আছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।