ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পাতার রঙে মিশে থাকে অপূর্ব ‘সবুজ ব্যাঙ’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
পাতার রঙে মিশে থাকে অপূর্ব ‘সবুজ ব্যাঙ’ পাতার ওপর নীরবে বসে রয়েছে সবুজ ব্যাঙ। ছবি: তিমু হোসেন

মৌলভীবাজার: ব্যাঙের আবার অপূর্ব কি! ব্যাঙ তো ‘ব্যাঙ’ই! আমাদের অনেকের মাঝেই এই ধারণা প্রচলিত। প্রকৃতির যেকোনো প্রাণীকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা কারো কারো স্বভাবসুলভ।

তবে বিজ্ঞান সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে প্রকৃতিতে প্রতিটি প্রাণীই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তার নিজের অবস্থান থেকে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।  

তাই প্রকৃতির খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষার স্বার্থে ব্যাঙ নামক এ চতুষ্পদ প্রাণীটিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। খাদ্যশৃংখল মানে হলো, প্রকৃতিতে বিচরণকারী প্রতিটি ছোট-বড় প্রাণী প্রতিটি প্রাণীর ওপরই নির্ভরশীল।  

প্রকৃতি কোনো কোনো প্রাণীর শরীরে জন্মগতভাবে যে বিশেষ রঙে পোশাকটি পরিয়ে দিয়েছে আর তাতে করে যদি তার শারীরিক সৌন্দর্যকে প্রকাশিত হয় তবে তো পুরো বিষয়টিকে ‘অপূর্ব’ বলতে হবে। সেক্ষেত্রে পানিতে জীবন কাটানো এই সবুজ ব্যাঙটি ‘উভচর প্রাণীকূলে’ তার আপন সৌন্দর্য মেলে ধরে।  

এই সবুজ ব্যাঙের ইংরেজি নাম Green Frog এবং বৈজ্ঞানিক নাম Euphlyctis hexadactylus. তবে Green Pond Frog বা Indian Green Frog এই ইংরেজি নামেও এর পরিচিতি রয়েছে।  

বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল ১ অনুযায়ী এই প্রাণীটি সংরক্ষিত।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী গবেষক ড. কামরুল হাসান এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন জলজভূমিতে এই ‘গ্রিন ফ্রগ’ পাওয়া যায়। আগে এটিকে যশোর এবং সুন্দরবনে পাওয়া যেতো বলে ধারণা করা হলেও এখন দেশের অনেক জায়গাতেই পাওয়া যেতে পারে। আমাদের ভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় এরা রয়েছে।  

এদের শরীরের উপরিভাগের রং সবুজ পাতার মতো। বয়স্ক ব্যাঙের পিঠের দিকে থেকে শুরু করে পেছন এবং পা পর্যন্ত গাঢ় সবুজ। আর পেটের দিকে রয়েছে সবুজাভ রঙের আভা বা লালচে হলুদ রঙের মিশ্রণ। এই ব্যাঙের হাতের আঙ্গুলগুলো পৃথক হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।       

খাদ্যতালিকা এবং বংশবৃদ্ধির কার্যকাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবুজ ব্যাঙ একুইটিক ভেজিটেশন (জলজ উদ্ভিদ) বেশি খেয়ে থাকে। ওরা প্রায় আশি শতাংশ জলজ সবজি এবং বিশ শতাংশ কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। এরা দিবাচর। রাতে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে চলাচল করে না। সাধারণত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এদের প্রজনন মৌসুম। তখন এরা বংশবৃদ্ধির কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে।  

একটি প্রাপ্ত বয়স্ক সবুজ ব্যাঙের মাথা থেকে পেছনের লম্বা পা পর্যন্ত এদের দৈর্য্য প্রায় ১৩০ সেন্টিমিটার। তবে ছেলে ব্যাঙ থেকে মেয়ে ব্যাঙ অপেক্ষাকৃত বড় হয়ে থাকে বলে জানান ড. কামরুল হাসান।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩ 
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।