ঢাকা: ঢাকায় সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া তিনটি বাঘ শাবকের ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দি ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ( ডব্লিউটিবি)। পাশাপাশি তাদের পক্ষ থেকে ওই শাবকগুলোকে পুনরায় পরিচিত পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া অথবা উপযুক্তভাবে লালন পালনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শও প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণে প্রশংসামূলক কাজ করার জন্য ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু পুরষ্কারপ্রাপ্ত সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে শাবকগুলো বড় হওয়া পর্যন্ত উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সবধরণের সহযোগিতা করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সম্ভব হলে বাঘ শাবকগুলোকে জঙ্গলে তাদের মায়ের সঙ্গে একত্রিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে একই সঙ্গে একে ঝুঁকিপূর্ণ এবং কঠিন কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মা বাঘিনীর অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে তাকে পাচারকারীরা মেরে ফেলেছে।
তবে সংস্থার পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শাবকগুলোর মাকে খুঁজে বের করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এ পদ্ধতির ঝুঁকি সম্পর্কেও সর্তক করে দেওয়া হয়। কারণ, বেশিদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে মা বাঘ হয়তো তার বাচ্চাদের প্রত্যাখান করতে পারে, এমনকি মেরেও ফেলতে পারে।
তবে বিকল্প উপায় হিসেবে বাঘগুলোকে বাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রেরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানে শাবকগুলো বন্য পরিবেশে বড় হতে পারবে এবং পরবর্তীতে আবারও সত্যিকারের বন্য পরিবেশে ফেরত যেতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে এরকম কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে ‘ডব্লিইটিবি’ এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানানো হয়। যদি শাবকগুলোকে ‘বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রে’ পাঠানো সম্ভব না হয় তবে অবিলম্বে এদের জন্য উপযুক্ত খাঁচা ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানানো হয়।
এজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ অন্যান্য সহায়তা করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে একই সঙ্গে বন্যপ্রাণী পাচার ও এই বেআইনী ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। বাঘশাবকগুলোকে পাচার চেষ্টার জন্য অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করারও আহবান জানানো হয়।
পাশাপাশি সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি বাঘ সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারকে সবধরণের সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর