ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: নাটোরে ভেঙে পড়েছে গাছপালা-বৈদ্যুতিক খুঁটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: নাটোরে ভেঙে পড়েছে গাছপালা-বৈদ্যুতিক খুঁটি

নাটোর: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নাটোরে দমকা হাওয়ার পাশাপাশি থেমে থেমে কখনও হালকা, কখনও মাঝারি, কখনও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।  

এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গাছপালা ভেঙে পড়েছে, বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অনেক স্থানে, ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি।

 

ঝোড়ো হাওয়ায় ঝরে পড়েছে আম, লিচু। হেলে পড়েছে ভুট্টা গাছ। কোথাও কোথাও উঠতি বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কোথাও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

রোববার (২৬ মে) রাত থেকে জেলার সর্বত্রই বৃষ্টি হচ্ছে। এনিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগ তৎপর রয়েছে। তারা মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শস্য) লুৎফুন নাহার বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে খরিপ-১ মৌসুমের ভুট্টার গাছ হেলে পড়েছে। এতে ভুট্টার পরাগায়ন বাধাগ্রস্ত হবে এবং দানা পুষ্ট হবে না। এছাড়া কিছু কিছু জায়গার ভুট্টা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন খরায় তাপপ্রবাহের কারণে আমের বোঁটা এমনিতেই শুকিয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে ফলে ঝড় ও বৃষ্টিপাতের কারণে বোঁটা নরম হয়ে আম ঝরে পড়ছে। এতে করে আমের ফলন কম হবে।  

তিনি বলেন, জেলার সর্বত্রই বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। তবে গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় এবার দেরিতে চারা রোপণের কারণে ধান পাকতে দেরি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এসব ধান কাটতে কৃষকদের দেরি হবে। এতে শ্রমিক ও অর্থ খরচ বেশি পড়বে। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. ফকরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সদর ও সিংড়া উপজেলায় ছয়টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। সেগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া গাছাপালা ভেঙে পড়ায় অন্তত ৪০ থেকে ৪৫টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব মেরামতের চেষ্টা চলছে।  

তিনি বলেন, বিদ্যুতের লাইন চালু করার মতো পরিস্থিতি থাকলেও বাতাসের গতিবিধি দেখা হচ্ছে। কেননা বাতাস বেশি থাকলে বিদ্যুতের লাইন চালু করা যাবে না। বাতাসের গতি কমলে বিদ্যুতের লাইন চালু করা হবে।

জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞা বাংলানিউজকে বলেন, গাছপালা ভেঙে পড়া ছাড়া জেলার কোথাও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। যেসব এলাকায় গাছপালা ভেঙে রাস্তা চলাচল বন্ধ ছিল, সেখান থেকে ভাঙা গাছপালা সরিয়ে পথ স্বাভাবিক করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, সব উপজেলায় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে মনিটর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। ঘূর্ণিঝড় রিমালকে ঘিরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সদা প্রস্তুত আছে।

এদিকে থেমে থেমে বর্ষণের কারণে সোমবার সকাল থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ ও স্কুলকলেজের শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা। ঝোড়ো হাওয়ায় ছাতা  উল্টে যাওয়ায় বৃষ্টি মাথায় নিয়েই চলাচল করতে হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিতে গরম কমলেও নিম্ন আয়ের মানুষ কাজ করতে পারছেন না। রিকশা, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৪

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।