ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৪১, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫
সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার জাপানের টোকিওতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সাগর ও মহাসাগর রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও বহুমুখী সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ (এসডিজি) অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণের একমাত্র উপায়।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) উপদেষ্টা জাপানের টোকিওতে সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন ভবনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত 'ওশেন ডিকেড ফিফথ ফাউন্ডেশনস ডায়ালগ – হাই-লেভেল রাউন্ডটেবল উইথ অ্যাম্বাসেডরস, এক্সপার্টস অ্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স' শীর্ষক সভার “ড্রাইভিং ওশেন লিডারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন: অ্যাডভান্সিং গভার্নেন্স, ব্লু ইকোনমি, অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স টু অ্যাচিভ থার্টি বাই থার্টি” শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ঢাকায় তার বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে প্লাস্টিক দূষণে নবম অবস্থানে রয়েছে, যার বড় অংশই আসে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় চলমান বৈশ্বিক চুক্তিতে ভৌগোলিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ বিধান থাকা প্রয়োজন।  

তিনি আরও বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প বাংলাদেশের উপকূলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে হংকং কনভেনশনকে তিনি “অপর্যাপ্ত” বলে অভিহিত করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অর্থনীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ ছাড়া সরকার ইতোমধ্যে 'অ্যাসেসমেন্ট অব কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন বায়োডাইভার্সিটি রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোসিস্টেম' প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মাধ্যমে জাতীয় ডাটাবেজ, সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ প্রটোকল তৈরি হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও এর প্রভাব বিষয়ে গবেষণাও সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের অনন্য সম্পদ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের সমুদ্রজাত মাছের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সামুদ্রিক মাছের সম্পদ যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি। আন্তর্জাতিক অংশীদাররা চাইলে বাংলাদেশে টেকসই সিফুড প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করে বলেন, যদি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তবে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। এতে লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। একই বিপদে রয়েছে বিশ্বের ৫২টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্র। তাই বৈশ্বিক সংহতি এখন সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ড. আতসুশি সুনামি, প্রেসিডেন্ট, সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন, ক্রিস্টিন ইগ্লুম, জাপানে নরওয়ে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, অধ্যাপক ইউতাকা মিচিদা, চেয়ার, ইউনেস্কো-আইওসি, ড. সাইফ আলগাইস, চেয়ার, আইওসি-আইএনডিও সাব-কমিশন এবং ইলানা ভি. সাইদ, চেয়ার ও স্থায়ী প্রতিনিধি, পালাউ (এওসিস–জাতিসংঘের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র জোট)।

এসকে/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।