সরু ও অতি লম্বা গলা দেখতে অনেকটা সাপের মতো বলে তাকে ‘সাপপাখি’ও বলা হয়। ঠোঁটটিও বেশ লম্বা।
বাইক্কা বিলে বহুবার পাখিটিকে দেখে অবাক হতে হয়েছে। অন্যান্য জলচর পাখির তুলনায় তার মাথা-গলা বেশ বড়। জলজ পরিবেশে বেশ উঁচু মাথা নিয়ে নিশ্চুপ বসে থাকে। সহজে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ‘চিগি, চিগি, চিগি’... শব্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে গান গায়।
গয়ার Anhingidae পরিবারের পাখি। পাখিবিজ্ঞানীদের কাছে এ পরিবারটি Anhinga নামে পরিচিত। ১৭৬০ সালে Anhingidae পরিবারের নামকরণ করেছিলেন Brisson।
এ পরিবারের পাখিগুলোর গলা সাপের মতো পিচ্ছিল। পৃথিবীর বিশাল এলাকা জুড়ে গয়ারের বসবাস হলেও এদের সংখ্যা ক্রমে ক্রমে কমে যাচ্ছে। এ কারণে আন্তর্জাতিকভাবে গয়ারকে প্রায় সংকটাপন্ন পাখি হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে।
বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ও প্রকৃতিপ্রেমী সাঈদ বিন জামাল বাংলানিউজকে বলেন, পাখিটির নাম গয়ার বা সাপপাখি। ইংরেজিতে Darter বলে এবং বৈজ্ঞানিক নাম Anhinga melanogaster। এরা চিকন দেহ ও লম্বা গলার বড় জলচর পাখি।
তিনি বলেন, এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ সেন্টিমিটার। ওজন সাধারণত দেড় বা পৌনে দুই কেজি হয়ে থাকে। এরা নদী, হ্রদ, হাওর-বিলে বিচরণ করে। একা বা জোড়ায় অথবা বিচ্ছিন্ন ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়। পানি থেকে উঠে মাটিতে বা গাছের শাখায় দাঁড়িয়ে ডানা ও লেজ ছড়িয়ে ভেজা পালক শুকায়।
তিনি বলেন, তাদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে প্রধানত মাছ। এরা সাঁতারে অত্যন্ত দক্ষ। পানিতে ডুব দিয়ে ছুরির মতো লম্বা ঠোঁটের আঘাতে শিকার ধরে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের জল এলাকায় এদের বাস। গয়ার বিশ্বে প্রায় বিপদগ্রস্ত এবং বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রজাতির পাখি।
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত। শিকার, বাসস্থান ধ্বংস ইত্যাদির ফলে এদেশে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে আসছে বলেও জানান সাঈদ বিন জামাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
বিবিবি/এএসআর