পাহাড়ি এলাকা বান্দরবান থেকে প্রজাপতির এই ছবিটি তুলেছেন সৌখিন চিত্রগ্রাহক মো. মাহাবুবুর রহমান। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত মাসের ১২ মে প্রায় ৮০ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে বান্দরবানের আলিকদম এসেছি।
তিনি আরো বলেন, আলিকদম থেকে থানচি রোডের কিছু কিছু জায়গায় এখনও ছোট ছোট বন রয়েছে। এগুলোতেই আমি ঘুরেবেড়াই পাখি আর প্রজাপতির সন্ধানে। বিশ্রামের জন্য একটা গাছের নিচে বসে পড়লাম। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর দেখলাম একটা প্রজাপতি আমার সামনে নাচানাচি করছে। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা বের করে শাটার চাপতে থাকলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধেই আবার উধাও হয়ে গেলো আর আমকে দিয়ে গেলো অনাবিল প্রশান্তি।
প্রজাপতি গবেষক অমিত কুমার নিয়োগী বাংলানিউজকে বলেন, প্রজাপতিটির বাংলা নাম জাদুকরী। ইংরেজিতে Circe এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hestina nama Doubleday, 1844। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন প্রজাপতি। এর আগে বাংলাদেশে এই প্রজাপতিটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এমন কোনো তথ্য নেই।
তিনি আরো বলেন, ২০০৪ সালে একজন বিদেশি গবেষক লারসেন তার লেখা “Butterflies of Bangladesh- An Annotated Checklist by IUCN” এর Appendix 1 এ বাংলাদেশে Circe এর নাম উল্লেখ করলেও আসলে কোনো সঠিক তথ্য বা উপাত্ত বা নমুনার অভাবে তিনি এই প্রজাতিটিকে বাংলাদেশের প্রজাপতির মূল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন নাই। এর ধাবাহিকতায় IUCN RED LIST ২০১৫ তেও এই প্রজাতিটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
প্রজাপতির বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, জাদুকরীর পাখনার ওপরে ও নিচের দুই পাশেই নিলভ-সাদা লাঠির মত দাগ রয়েছে। যার বেশির ভাগের অগ্রপ্রান্ত “V” আকৃতির। সম্মুখ পাখনার সেলে ছোট বড় অনেকগুলা দাগ রয়েছে। এন্তেনা কাল; দেহের রঙ ওপরের দিকে কাল ও নিচের অংশে নিলাভ-সবুজ। এরা দেখতে অনেকটা গ্লসি টাইগারের মত। এরা সাধারণত পাহাড়ি প্রজাপতি। সমতল ভূমিতে এদের কম দেখা যায়।
বাংলাদেশের জীব-বৈচিত্রের অধিকাংশ নিদর্শন এখানে এখনো রক্ষিত রয়েছে। কিন্তু আমাদের নানা বিধ্বংসীমূলক পদক্ষেপ ও অসতর্কতার কারনেই আজ অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে। সরকারি ও বেসরকারি নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে অবশিষ্ট জীববৈচিত্র্যসমূহকে রক্ষা করার সময় এসেছে বলে জানান এই গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৭
বিবিবি/বিএস