বাইক্কাবিলসহ সারাদেশে খুঁজে পাওয়া যায় ধানটুনিদের। তবে তাদের শত্রু অনেক।
ধানটুনির ইংরেজি নাম Zitting Cisticola এবং বৈজ্ঞানিক নাম Cisticola juncidis। ‘ভোমরা-ছোটন’ নামেও উল্লেখ করা হয়েছে এই পাখিকে। পাখিটির দেহ বাদামি। পিঠ, ডানা ও লেজে রয়েছে লম্বা কালো দাগ। এর কোমর লালচে।
মাত্র কয়েকবছর আগে বাইক্কা বিলের কাছাকাছি পৌঁছালে পথের দু’পাশের প্রাকৃতিক ঢোলকলমির ঝোপে প্রায়ই তাদের একাধিক সংখ্যায় দেখা যেত। ‘যিট যিট যিট, যিট যিট যিট’ ধ্বনিতে এডাল-ওডাল চষে বেড়াতো।
বর্তমানে সব প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো ব্যক্তিগত মাছের ঘের হয়ে পড়ায় ওই জায়গা থেকে ঢোলকলমিসহ অন্যান্য জলজ উদ্ভিদগুলো মানুষের অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে। আর জলজ উদ্ভিদগুলোর হারিয়ে যাবার সাথে সাথে এ সব উদ্ভিদের মমতায় লালিত ধানটুনি জাতীয় ছোট ছোট পাখিগুলোও বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে।
কেননা, এ জাতীয় ছোট পাখিগুলো ঢোলকলমিসহ অন্যান্য জলজ উদ্ভিদগুলোর উপর সরাসরি নির্ভলশীল।
প্রখ্যাত পাখি গবেষক ও লেখক শরীফ খান বলেন, ধানগাছে এদের বেশি পাওয়া যায় বলে এদের নাম ‘ধানটুনি’। আকারে চড়ুইয়ের একটু ছোট। ধানক্ষেত ছাড়াও কাশবন, নলখাগড়া, হোগলা, ঘাসবনে ধানটুনি পাখিদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এ জায়গাগুলোই এদের প্রিয়। সারাদেশের ফলের জমি এবং মাঠের প্রান্তরে এদের সহজে দেখা মেলে। শারীরিকভাবে এরা ক্ষুদ্র এবং অনুজ্জ্বল রঙের হয়ে থাকে বলে সহজে আমাদের চোখে পড়ে না।
এ পাখি গবেষক আরো বলেন, এর অত্যন্ত নিরীহ পাখি। তবে চতুর ও যথেষ্ট বুদ্ধিমান। ডিম পাড়ে দুই থেকে তিনটি। বারো থেকে পনেরো দিন পর ছানা ফোটে। ছানা ফোটানোর আনন্দে এরা একত্রে বেশ ডাকাডাকি করে। স্ত্রী এবং পুরুষ দু’জনে মিলেই ছানাকে খাওয়ায়।
আমাদের প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো বেদখল হয়ে যাওয়া এবং ধানক্ষেত গুলোতে কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এই পাখিদের অস্তিত্ব মারাত্মক সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে জানান প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ শরীফ খান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
বিবিবি/এসএইচ