চৈত্রের এ তাপদাহে প্রকৃতির বুকে আরও একটি অনবদ্য প্রাকৃতিক আহ্বান বার বার ডেকে উঠছে। তার এমন ডাকের বিমুগ্ধ সুর যেন তারুণ্যদীপ্ত বসন্তের লালিত সঙ্গীত।
বাংলার তিন কোকিলের ডাক এখন আমাদের চারপাশের প্রকৃতিতে বার বার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এরা হলো- ‘এশীয় কোকিল’ (Asian Koel / Western Koel), ‘পাতি-চোখগেলো’ (Common Hawk-Cuckoo) এবং ‘বউ কথা কও-পাপিয়া’ (Indian Cuckoo)। কালো কোকিলের আকার ৪৩ সেন্টিমিটার এবং চোখ গেলো ও বউ কথা কও পাখি দুটির আকার ৩৪ সেন্টিমিটার করে।
এদের প্রজনন মাস শুরু হয়ে গেছে। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত চলবে তাদের সঙ্গী নির্বাচনের হাকডাক। প্রজননকালে পুরুষ পাখি একটিমাত্র সুরেলা শব্দে তীব্রভাবে ডেকে ওঠে। স্ত্রী পাখিটি ডাকের অপেক্ষার প্রহর গুনে। যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনো স্ত্রী পাখি তার ডাকের প্রতিত্তোর দিচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত চলে তার বিরামহীন ডাক। এভাবেই তীব্র ডাকের ভেতর দিয়ে তারা সঙ্গী নির্বাচন করে।
প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চারপাশে পরিচিত তিন কোকিলের ডাক এখন ক্রমাগত শোনা যাচ্ছে। এরা হলো কালো কোকিল, চোখ গেলো এবং বউ কথা কও। কোকিল এবং চোখ গেলো পাখিটিকে শহরে প্রায়ই দেখা যায়। তবে বউ কথা কও পাখি গ্রামের দিকে বেশি দেখা যায়।
কোকিল সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমরা কালো কোকিলকে শুধু ‘কোকিল’ বলি; বাকি সব কোকিল প্রজাতিকে ‘পাপিয়া’ বলি। এরা আসলে সবই কোকিল প্রজাতির পাখি। এরা প্রত্যেকেই বাসা তৈরি করতে পারে না এবং অন্য পাখির বাসায় ডিম পাড়ে। প্রজনন মৌসুমে ওরা নতুন জোড়া বাঁধে। কালো কোকিল পাখিটি পাতিকাক বা শালিকের বাসায় ডিম দেয়। চোখ গেলো এবং বউ কথা কও পাখিগুলো বুলবুলি, বাঘাটিকি, বনছাতারে, বসন্তবৌরির বাসায়ও ডিম পাড়ে।
সবচেয়ে আগে ডাকে ‘কোকিল’ এবং ‘চোখ গেলো’ পাখি। বউ কথা কও-পাপিয়া পাখিটি রাতে ডাকে। বিশেষ করে জ্যোৎস্না রাতে উড়ে উড়ে ডাকে। ওরা একটু দেরিতে ডাকতে শুরু করে। তবে এখন হয়তো ওরা ডাকতে শুরু করে দিয়েছে বলে জানান প্রখ্যাত পাখি গবেষক ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
বিবিবি/আরআর