ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মাকড়সার জালে ঋণী ছোট পাখিরা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৮
মাকড়সার জালে ঋণী ছোট পাখিরা বেগুনি মৌটুসি মাকড়সার জাল দিয়ে বাসা তৈরি করছে। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার: প্রকৃতির পরতে পরতে রহস্যের ছোঁয়া। সেই রহস্য ভেদ করেই প্রকৃতির ছোট ছোট প্রাণীকূল খুঁজে পায় তাদের টিকে থাকার আশ্রয়। দিনের পর দিন এভাবেই তারা ব্যবহার করে চলেছে বেঁচে থাকার নানান কলাকৌশল।  

প্রজনন মৌসুমে পাখিদের প্রয়োজন পড়ে বাসা তৈরির। প্রকৃতিতে দুইটি পাখির যুগল-মিলনের পর লতাপাতা দিয়ে নিজের বসবাসের ঘরটি তৈরি জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে তারা।

সেই বাসা তৈরিতে তারা ব্যবহার করে মাকড়সার জাল।   

তবে প্রজননের পর্বটা এতো সহজলভ্য নয়। পুরুষ পাখিটি ক্রমাগত গান গেয়ে গেয়ে জয় করতে হয় স্ত্রী পাখিটির মন। তারপর আসে সফলতা, তবে ব্যর্থতা যে থাকে না তা কিন্তু নয়। পুরুষ গায়ক পাখিটিকে স্ত্রী পাখিটির পছন্দ না হলে সে আবার অন্য পুরুষ সঙ্গী খুঁজতে থাকে।  

এই হলো পাখিদের সঙ্গী নির্বাচন। সঙ্গী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে তখন প্রয়োজন পড়ে ঘর তৈরির।

মাকড়সা খাওয়া পাখি স্পাইন্ডার হান্টার।  ছবি: সংগৃহীত সে ক্ষেত্রে কোনো কোনো ছোট পাখি মাকড়সার জালকে এতো সুন্দর করে শৈল্পিকভাবে ব্যবহার করে যে তা খুবই কার্যকর ও নান্দনিক হয়ে ফুটে উঠে।   

বন্যপ্রাণী গবেষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বিশেষত ছোট পাখিরা তাদের বাসা তৈরিতে মাকড়ার জাল ব্যবহার করে থাকে। যেমন ছোট পাখির মধ্যে মৌটুসি (Sunbird), টুনটুনি প্রভৃতি পাখি রয়েছে। প্রজনন মৌসুমে এই বাসা তৈরি তাদের প্রধান কাজে রূপে নেয়।

মাকড়সার জাল দিয়ে পাখির বাসা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ছোট ছোট পাতার অংশ বা ঘাসের অংশ এনে মেইনলি জয়েনিং এর কাজটা করে। মাকড়সার জাল কিন্তু অনেকটা আটালো টাইপের হয়ে থাকে। এই আটালো জালটা যখন পাতা বা ঘাসের অংশগুলোতে লাগিয়ে দেয় তখন সে বাসাটি শক্ত এবং মসৃণ হয়। এমন সব কলাকৌশল অবলম্বন করে পাখিরা প্রকৃতিতে যুগ যুগ ধরে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।

‘শুধু মাকড়সার জাল পেছানোই নয়, কোনো কোনো পাখি তো মাকড়সা খেয়েই বাঁচে। যেমন- Spider hunter। এ পাখির প্রধান খাবারই হচ্ছে মাকড়সা। এর ঠোঁট বেশ লম্বা। এরা মাকড়সা খেয়েই বাঁচে,’ বলেন ড. কামরুল হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৮
বিবিবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।