১৯৯৬ সনে মৌলভীবাজারের এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পশ্চিম ভানুগাছের রিজার্ভ ফরেস্টের ১২৫০ হেক্টর এলাকা নিয়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে বর্তমানে সরকারি এ বনভূমি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে লাউয়াছড়া বেদখলকৃত এলাকা ঘুরে জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ডরমিটরি টিলা সংলগ্ন পূর্ব এলাকায় প্রায় ১৫ একর ভূমি অবৈধভাবে দখল করে গত চার বছর ধরে লেবু বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। ডরমিটরি এলাকার পশ্চিম পার্শ্বে ‘হীড বাংলাদেশ’ অফিস সংলগ্ন জাতীয় উদ্যানের আরও একটি টিলার প্রায় ১৫ একর ভূমি দখলে নিয়ে লেবু বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। লেবু বাগান ঘেষা টিলাগুলোতে গাছগাছালি ও লতাগুল্ম কেটে টিলা খসে নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে আবাদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এসব টিলায় দীর্ঘদিন ধরে টিনসেড ঘর করে লোকজন বসানো হয়েছে দখলকৃত টিলা দেখভালের জন্য। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল নির্দ্বিধায় এসব টিলাভূমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে নিজেরা আধিপত্য স্থাপন করলেও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগ নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ফলে উদ্যানে বসবাসরত বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে আসছে। জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে এসব বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিভাগের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, যারা এসব ভূমি বেদখল করছে, তারা এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আছে। তারা বনভূমি দখল করে অবৈধভাবে লেবু বাগান গড়ে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছে। এদের কেউ কেউ ইতিপূর্বে জাতীয় উদ্যান সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিল। ফলে জাতীয় উদ্যানের সার্বিক বিষয়াদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু মুসা শামসুল মুহিত বলেন, আমরা দখলকৃত কিছু ভূমি ইতোমধ্যে উদ্ধার করেছি। তবে হীড (বাংলাদেশ) সংলগ্ন টিলায় দখলের বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৯
বিবিবি/এইচএ/