মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বীরগঞ্জ সিংড়া ফরেস্টে শকুনগুলো অবমুক্ত করা হয়। এছাড়া শকুনের নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিতকরণ ও শকুন সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. রকিবুল আমিন, বগুড়া অঞ্চলের বন সংরক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার, রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান, দিনাজপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুস সালাম তুহিন।
বক্তারা বলেন, প্রকৃতির ঝাড়ুদার বলে খ্যাত প্রাণী শকুন সম্পর্কে একসময় মানুষের খারাপ ধারণা ছিল। শকুনকে অশুভ এমনকি মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে ভাবা হতো। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শকুন অশুভ তো নয়, বরং মৃত পশু খেয়ে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। শকুন এক প্রকার পাখি। এটি মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে থাকে। পাখিগুলো তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী শিকারি পাখি বিশেষ।
জানা যায়, সারা বিশ্বে প্রায় ২৩ প্রজাতির শকুন দেখা যায়। এর মধ্যে ৬ প্রজাতির শকুন আমাদের দেশে রয়েছে। ৪ প্রজাতি স্থায়ী আর ২ প্রজাতি পরিযায়ী। বাংলা শকুন ছাড়াও আছে রাজ শকুন, গ্রিফন শকুন বা ইউরেশীয় শকুন, হিমালয়ী শকুন, সরুঠোঁট শকুন, কালা শকুন ও ধলা শকুন।
দেশে তিন প্রজাতির শকুন স্থায়ীভাবে বসবাস করত। এর মধ্যে এক প্রজাতি ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্তির পথে দেশি প্রজাতির বাংলা শকুনও। শকুন অধিকাংশই বিপন্নপ্রায়। গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যথানাশক ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ ব্যবহারে শকুন বিলুপ্তির পথে। ওই ওষুধ দেওয়া পশুর মৃতদেহ খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে শকুন মারা যায়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সিংড়া ফরেস্টের গভীর জঙ্গলে সাতটি শকুন অবমুক্ত করা হয়।
আয়োজকরা জানান, বিভিন্ন সময় আশপাশের এলাকায় শকুন আহত হয়ে স্থানীয় সিংড়া ফরেস্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। পরে সিংড়া ফরেস্ট কর্তৃপক্ষ আহত শকুনদের চিকিৎসা দিয়ে অবমুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
জিপি