আবহাওয়াবিদ মুহম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ হিসেবে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নিরক্ষীয় ভারত মহাসগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ আছে।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলবাসীর জন্য শঙ্কার তেমন কিছু আপাতত দেখতে পাচ্ছে না আবহাওয়া অধিদফতর। এখন পর্যন্ত যে এটির যে অভিমুখ, সেটি ভারতের উপকূল অতিক্রম করেই শান্ত হবে বলে মনে হচ্ছে।
তবে শঙ্কা দেখা দিয়েছে কালবৈশাখী ঝড় নিয়ে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৫টা পর্যন্ত দেওয়া এক পূর্বাভাসে বলেছে, ১৮টি জেলা ও তার আশেপাশের এলাকায় কালবৈশাখী ‘তাণ্ডব’ চালিয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, রোববার ভোর ৫টার মধ্যে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেট-এই ১৮টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বা আরও অধিক বেগে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
কালবৈশাখী তাণ্ডব চালাতে পারে বলে শঙ্কা থেকে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া ও সিলেট অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ফরিদপুরে ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিন আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা খানিকটা কমলেও দাবদাহে ভুগতে হয়েছে মানুষকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
ইইউডি/এইচএ/