ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

গরমে অস্থির প্রাণিকুল, ধকল কাটাতে বাড়তি নজর

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
গরমে অস্থির প্রাণিকুল, ধকল কাটাতে বাড়তি নজর

ঢাকা: প্রখর তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনভর সূর্যের আগুন যেন ঢেলে পড়ছে মাটিতে। সূর্যোদয়ের পর থেকেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করছে প্রকৃতি। মৃদু তাপপ্রবাহেই মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। মানবকুলের পাশাপাশি গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকুলও।

গরমের ধকল কাটাতে রাজধানীর মিরপুরের চিড়িয়াখানায় নেওয়া হচ্ছে বাড়তি পরিচর্যা। বাঘ, সিংহ ও ভালুকের খাঁচায় দিনে তিনবার পানি পরিবর্তন করা হচ্ছে।

নিয়মিত খাবার স্যালাইনসহ কয়েক বার ঠাণ্ডা পানিতে নামিয়ে গোসল করানো হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য পরিচর্যা করা হচ্ছে।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, মাংসাশী প্রাণীগুলোর মধ্যে সিংহকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। কারণ বাঘ ও ভালুক পানিতে নামলেও সিংহ পানিতে গোসল করতে চায় না। খাবার খাওয়ার পর থেকে খাঁচার বিছানো বালিতে গড়াগড়ি করে ও ঝিমাতে থাকে।

গরমে অতিষ্ঠ প্রাণীকুল।  ছবিটি মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে তুলেছেন জিএম মুজিবুর।

অন্যদিকে একই অবস্থা বাঘেরও। প্রতিদিন সকাল ১১টার মধ্যেই পানিতে সাঁতার কাটে বাঘ। এরপরে খাবার খাওয়া শেষে ভ্যাপসা গরমে হাঁপাতে থাকে। অনেক সময় হুংকারও ছাড়ে। তখন ওষুধ মিশ্রিত স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। একই সঙ্গে মাংসের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গরমের অস্থিরতায় খাঁচার মধ্যে পায়চারি করছে ভাল্লুক। সামান্য স্বস্তি পেতে অনেক সময় খাঁচার মধ্যে বিছানো ঠাণ্ডা বালিতে গড়াগড়ি পাড়ছে। কয়েক মিনিট পর খাঁচার মধ্যে থাকা পানিতে শরীর চুবিয়ে নিচ্ছে।

ভাল্লুকের খাবারের মেন্যুতে সকালে পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। এরপরে পর্যায়ক্রমে দুধ, ভাত, শসা, কলা, আঙ্গুর ও আপেল মিক্সড করে দেওয়া হচ্ছে। দৈনিক একাধিক বার পানি পরিবর্তনসহ খাবার স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
 
হাতিকে সকাল-বিকেল গোসল করানো হচ্ছে। উটপাখি ও ইমু পাখির ক্ষেত্রেও একই ধরনের পরিচর্যা নেওয়া হচ্ছে। ওষুধ মিশ্রিত স্যালাইন পানি খাওয়ানো হচ্ছে তাদেরও।  

গরমে অতিষ্ঠ প্রাণীকুল।  ছবিটি মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে তুলেছেন জিএম মুজিবুর।

মিরপুর চিড়িয়াখানায় মাংসাশী শাখায় দায়িত্বরত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম আজম বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিনের তাপদাহে মাংসাশী প্রাণিগুলো অস্থির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বাঘ, সিংহ ও ভাল্লুক। তবে সিংহকে নিয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এরা পানিতে গোসল করতে পছন্দ করে না। তবে নিয়মিত স্যালাইন খাওয়ানো হচ্ছে। দিনে দুই থেকে তিনবার ঠাণ্ডা পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, মাংসাশী প্রাণিগুলোকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তারপরও অধিকাংশ সময় এসব প্রাণী জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছে। গরমের ধকল দূর করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
এমআইএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।