সম্প্রতি পানিতে ফুটেছে সেই গোলাপ। শ্বেতশুভ্রতার প্রতীক হয়ে মৃদু ঢেউয়ে দুলে দুলে মনোমুগ্ধকর ভঙ্গিমায় নীরবে দাঁড়িয়ে আছে ‘জল গোলাপ’।
ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকার পরিচালক ও বৃক্ষগবেষক মোল্লা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, পানিতে ফোটা গোলাপ প্রজাতির উদ্ভিদটির নাম জল গোলাপ (Sagittaria japonica)। শ্বেতশুভ্র বসনের পবিত্রতার অবয়বে আকর্ষণীয় দীপ্তিময়তার অপর নাম ‘জল গোলাপ’।
জলজ এ উদ্ভিদ জলগোলাপের সাদা রঙের ফুল হয় যা গোলাপ ফুলের মতো দেখতে। এর গাছের আছে লম্বা তীরের মতো চিকন সবুজ পাতা। জল গোলাপ হয় ভিজা বা কম পানি আছে এমন মাটিতে। জানান তিনি।
দৈর্ঘ্য ও প্রস্ফুটন সম্পর্কে তিনি বলেন, দশ থেকে পঞ্চাশ সেন্টিমিটার গভীর পানির নিচে কন্দ লাগালে জলগোলাপ গাছ হয়। ৪৫ সেন্টিমিটারের উপর পাতা দৃশ্যমান রাখতে হবে। জল গোলাপের ফুল হয় ২ সেন্টিমিটার থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের। একটা বড় লাঠির মধ্যে ৫ থেকে ১৫টা ফুল হয়।
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক এর বৈশ্বিক অবস্থান সম্পর্কে বলেন, জল গোলাপকে ককেসান অঞ্চল তথা জর্জিয়া, আজারবাইজান, আর্মেমিয়াসহ রাশিয়ান ভূখণ্ডকেই জলগোলাপের আদি নিবাস মনে করা হয়। তবে আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল থেকে ফ্রিনল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, সার্বিয়া, তুরস্ক, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনামেও পাওয়া যায়। অনেক দেশে জল গোলাপ খাদ্যশস্য হিসেবে চাষ করা হয়।
এর উপকারিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, জল গোলাপের কন্দ বা টিউবার খাওয়া যায়। এটি হলো এক ধরনের সবজি। জাপানে আলুর মতো জল গোলাপের কন্দকে ওমোদাকা বলা হয়। চীনারা বলে ‘চিগু’। চীন ও জাপানের লোকেরা জল গোলাপের কন্দ শারীরিক উত্তেজনা পাওয়ার বাড়ানোর জন্য খান। এই গাছের মূল-কন্দ বিশেষ পদ্ধতিতে খেলে শরীরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও জড়তা দূর হয়।
ভিয়েতনামের লোকেরা জল গোলাপের নতুন পাতা ও শিকড় স্যুপ হিসেবে খেয়ে থাকেন। চীনে জল গোলাপ ওধুষ বানানোর কাজে ব্যবহার হয় বলে জানান উদ্ভিদ গবেষক মোল্লা রেজাউল করিম।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা এপ্রিল ২৮, ২০১৯
বিবিবি/এএ