তবে হাঁসফাঁস গরম থেকে মুক্তির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এখনও। কাঠফাটা গরমের শেষ দিনটি যেন সবাইকে জানান দিয়ে যাচ্ছে।
একটু বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। তাপমাত্রার দাপটে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও গরমে কষ্ট পাচ্ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়াসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষজনের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ‘ত্রাতা’ হয়ে কখন বৃষ্টি ঝরবে সেই অপেক্ষার প্রহর গুণছেন গরমে নাস্তানাবুদ মানুষগুলো।
বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় মানুষ মাত্রাতিরিক্ত ঘামছেন। তাই ঘরের বাইরে বের হলেই মানুষ সঙ্গে নিচ্ছেন ছাতা এবং পানির বোতল। গরমের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছের ছায়ায় অনেকেই বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর পথচারিরা ভিড় করছেন ফুটপাতের শরবত, তাল এবং ডাব বিক্রেতাদের কাছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ‘মৃদু’, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ‘মাঝারি’ এবং ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই হিসেবে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাজশাহীতে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। শুক্রবার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তা এখন মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বর্তমানে ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই করছে। দু’দিনের আগে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিন রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বিকেল সাড়ে ৩টায় ছিল ৫৬ শতাংশ।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রাজিব খান বলেন, সাধারণত অনেক সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাপমাত্রা উপরের দিকে উঠতে থাকে। এজন্য বিকেল সাড়ে ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সন্ধ্যা ৬টায় পাওয়া তাপমাত্রা সর্বশেষ রিডিং বলে বিবেচনা করা হয়। তবে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় যে তাপমাত্রা ছিল সন্ধ্যা ৬টায় সেই তাপমাত্রা আর বাড়েনি। রাজশাহীর ওপর দিয়ে শুক্রবার মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের এই জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া কর্মকর্তা।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতরের ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ অতিক্রম করে বাংলাদেশের পূর্বাংশ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এতে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, কুষ্টিয়া, যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় তা প্রশমিত হতে পারে। যদিও ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা নেই। ১৬ জুনের পরে ঢাকার তাপমাত্রা কমতে পারে। এতে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশের অবশিষ্টাংশে বিস্তার লাভ করতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
এসএস/আরবি/