সরেজমিনে চিড়িয়াখানা ঘুরে প্রাণীগুলোকে আগের তুলনায় আরও বেশি সতেজ ও প্রাণবন্ত দেখা যায়।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২০ মার্চ থেকে চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জনমানবশূন্য চিড়িয়াখানায় ইতোমধ্যে বাচ্চা জন্ম দিয়েছে জিরাফ। মা জিরাফ আর তার শাবক দুজনেই সুস্থ আছে, দুর্যোগের সময় জন্ম দিয়েছে বলে বাচ্চা জিরাফটির নামকরণ করা হয়েছে দুর্জয়। চিড়িয়াখানার উটপাখিও অনেক ডিম দিচ্ছে। বৃহৎ প্রাণী জলহস্তীও বাচ্চা দিয়েছে। অন্য আরও পশু বাচ্চা দেওয়ার অপেক্ষায় আছে।
জনমানবশূন্য চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণীদের দৈনিন্দন জীবনে এখন নেই বিরক্তিকর হাঁকডাক। প্রাণীরা বন্দি থাকলেও কিছুটা হলেও বন্য পরিবেশের স্বাদ পাচ্ছে। ফলে বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, জলহস্তী, কুমির এখন অনেকটাই আয়েশি জীবন কাটাচ্ছে। হরিণ রয়েছে চির প্রশান্তির জীবনে। ময়ূর তার পেখম মেলে প্রকৃতির শোভা বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখরিত চিড়িয়াখানা। হনুমান, বানর রয়েছে তাদের দুষ্টুমিতে মত্ত। চিড়িয়াখানার অন্য প্রাণীদেরও দেখা যায় মনের আনন্দে চঞ্চলতার শীর্ষে অবস্থান করতে।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণী ও কর্মকর্তাদের করোনা ভাইরাস মুক্ত রাখার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের চিড়িয়াখানায় ঢোকার সময়ে জ্বর পরীক্ষা করা হয়, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা এবং হ্যান্ডগ্লাভস এবং গামবুট পরার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘মাংসাশী প্রাণীদের যারা দেখাশোনা করে তাদের পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট পরে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটা খাঁচায় আমরা দুই থেকে তিন দিন পরপর ডিজইনফেকশান স্প্রে করছি। ’
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এখন চিড়িয়াখানায় কোনো দর্শনার্থী নাই, জনমানব শূন্য তাই প্রাণীরা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে। খাঁচার মধ্যে তারা কোনোরকম বিরক্ত ছাড়াই ঘোরাফেরা করছে। আগে যে প্রাণীগুলো খাঁচার মাঝখানে জড়সড় হয়ে বসে থাকতো তারা এখন চঞ্চল। এরআগে প্রাণীদের যে খাবার দেওয়া হতো সব খাবার তারা খেত না। এখন তারা সব খাবার খেয়ে ফেলে। ভালোমত খাবারের কারণে এবং কোলাহলহীন পরিবেশ থাকায় প্রাণীগুলো প্রজনন কাজও সঠিকভাবে করতে পারছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে আসলে একদিন আবার সব কিছুই আগের মতো স্বাভাবিক হবে যাবে। চিড়িয়াখানায় আবারও আসবে মানুষ, বাড়বে জনসমাগম এবং কোলাহল। তবে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের মধ্যে এখন যে আনন্দ-উদ্দাম-চঞ্চলতা দেখা যাচ্ছে তা যেন অটুট থাকে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২০
আরকেআর/এএ