রাজশাহী: রাজশাহীতে টানা এক সপ্তাহ থেকে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। মাঝেমধ্যে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও এর কোনো প্রভাব পড়ছে না বরফ শীতল প্রকৃতিতে।
রাতের শুরু থেকে রোজ সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রকৃতিতে থাকছে ঘন কুয়াশা। সেই সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্বিগুণ।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে গত ১১ জানুয়ারি রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়-১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ১২ জানুয়ারি একলাফে তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
পরে ১৩ জানুয়ারি রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরপর ১৪ জানুয়ারি ছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৫ জানুয়ারি ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৬ জানুয়ারি ছিল ১০ দশমিক ৬ এবং রোববার (১৭ জানুয়ারি) ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ রহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ভোর ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৪ শতাংশ। আর আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সকাল সূর্য উঠলেও তার তেজদীপ্ত কিরণ ছিল না বললেই চলে।
বর্তমানে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই ওঠানামা করছে। অর্থাৎ রাজশাহীতে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বইয়ে চলা কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে কাঁপছে ছিন্নমূল মানুষ। শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। পথের কিনারায় তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ চেষ্টা করছেন। সন্ধ্যার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ দোকানপাট ও হাট-বাজার। গ্রামগুলোতে শীতের প্রকোপ আরও বেশি। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
মহানগরসহ রাজশাহী অঞ্চলের হাট-বাজারে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় অনেক বাড়ছে। শীতবস্ত্র কিনতে প্রতিদিনই মহানগরের ফুটপাতে নিম্ন আয়ের লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন। তবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা যেতে পারছেন না কোনো দোকানেই। অনেকেই তাকিয়ে আছেন সমাজের বিত্তবান ও সরকারি সহায়তার দিকে। তবে ইতোমধ্যেই সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ডিডি) ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, বর্তমানে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এরমধ্যে নিউমোনিয়া ও কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২১
এসএস/এএটি