মৌলভীবাজার: কোনো কোনো বনের নিরাপত্তাটুকু হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। বন ধ্বংস, বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন, বন্যপ্রাণীদের লুকবার জায়গার অভাব, বন্যপ্রাণীদের তীব্র খাদ্য সংকট, প্রাকৃতিক বনে প্রভাবশালীদের থাবা প্রভৃতি নানা কারণে বন আজ ক্ষতির মুখে।
বন্যপ্রাণীদের কেউ কেউ অস্তিত্ব সংকটে বা বড় নিরুপায় হয়ে ফিরে আসে লোকালয়ে। এখানেই বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা চালায়। তবে সেটা সবার আড়ালে। আর প্রাণীটি যদি নিশাচর হয়, তবে তো সুবিধে ঢের। মানুষ আড়াল হলেই বা মানুষ ঘুমিয়ে গেলেই নিশাচর প্রাণীটি টিকে থাকার জন্য খাদ্য সংগ্রহের যুদ্ধ শুরু করতে সুবিধে হয়।
বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে শ্রীমঙ্গলের মৌলভীবাজার রোড সংলগ্ন আরডিআরএস এর অফিসের বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বন বিড়াল এবং তার একটি ছোট্ট ছানাকে। এ উদ্ধারাভিযানে অংশ নেয় শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল এবং স্থানীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা।
স্বপন দেব সজল বাংলানিউজকে বলেন, আরডিআরএস এর অফিসের পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির সিলিঙের ওপর থাকতো একটি বন বিড়াল। আজ ছানাসমেত লোকজন তাকে দেখে আমাদের খবর দেয়। আমি এসে দেখি সর্বশেষ বন বিড়ালটি আত্মরক্ষার্থে আশ্রয় নিয়েছিল বাথরুমে। আর তার ছানাটি গোপন একটি কোণে লুকিয়ে ছিল। পরে আমি বনবিড়াল এবং তার ছানাকে উদ্ধার করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করি।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের লোকালয়ের আশেপাশের ঝোপঝাড়গুলো উজাড় হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী বনের প্রাকৃতিক পরিবেশও আজ নানা কারণে বিপন্ন। ফলে বনে বাসকরা প্রাণীরা এভাবেই লোকালয়ে এসে এক সময় না একসময় আমাদের হাতে ধরা পড়ছে বলে আক্ষেপের সঙ্গে জানান সজল।
বন বিড়ালের ইংরেজি নাম Jungle Cat এবং বৈজ্ঞানিক নাম Felis chaus। এরা নিশাচর প্রাণী। তবে দিনের বেলাও মাঝে মাঝে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। সাধারণত এরা বনজঙ্গলের আশেপাশে, গ্রাম-গঞ্জের নির্জন ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) গবেষণামূলক তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে বন বিড়াল ‘সংকটাপন্ন’ প্রাণী (অর্থাৎ তাদের অস্তিত্ব বেশ ঝুঁকির মুখে) হিসেবে চিহ্নিত।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২২
বিবিবি/কেএআর