ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

‘পাহাড়ি ময়না’ যেভাবে রেঁস্তোরায় গিয়েছিল

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২২
‘পাহাড়ি ময়না’ যেভাবে রেঁস্তোরায় গিয়েছিল রেঁস্তোরার ভেতরে পাহাড়ি ময়না পাখি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: রেঁস্তোরায় সাধারণত মানুষরাই যায়, পশুপাখি নয়। পছন্দ মতো খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণের আলোচনায় ক্লান্তি মুছে দেওয়ার চমৎকার সুযোগ থাকে বলে পথপাশের রেঁস্তোরাগুলোর তাই এতো আকর্ষণ।

 কিন্তু ঘটনাচক্রে একটি পাহাড়ি ময়না পাখি (Common hill myna) চলে এসেছিল শহরের একটি সুসজ্জিত রেঁস্তোরায়। এ বিষয়টি কিছুটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। কিছুক্ষণ সেখানে সময় কাটিয়েও ছিল পাখিটি।

শুধু তা-ই নয়, তার আপন শিসধ্বনিতে আশপাশের মানুষদের করে রেখেছিল মুখরিত। তার স্বভাবজাত কণ্ঠস্বরের লালিত ধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছিল রেঁস্তোরাময়। কর্তব্যরত ওয়েটারের দল অন্য কাজ ফেলে এসে ভিড় জমিয়েছিল ময়না পাখিটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।  

এই ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল শহরের একটি স্বনামধন্য রেঁস্তোয়ায়।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার (৭ নভেম্বর) বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্দেশে শ্রীমঙ্গল শহরের পশ্চিম রূপসপুর এলাকার জামাল মৃধা কাছ থেকে খাঁচাবন্দী পাহাড়ি ময়না পাখি উদ্ধার করেন শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।

এ সময় তার সঙ্গে বনবিভাগের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  


ময়না পাখি উদ্ধার অভিযানটি পরিচালিত হয় সকালে, এরপর উদ্ধারের অংশ নেওয়া বনবিভাগের লোকজন প্রাতরাশ (সকালের নাস্তা) করার জন্য একটি রেঁস্তোরায় যায়। তখন বিভাগের লোকজন খাঁচাবন্দী ময়না পাখিটিকে নিরাপত্তার স্বার্থে একা গাড়িতে না রেখে তাদের সঙ্গে নিয়ে রেঁস্তোরায় প্রবেশ করেন। এভাবেই প্রায় ৩০ মিনিট পর পাহাড়ি ময়নাটি সেই রেঁস্তোরায় অবস্থান করে সবাইকে তার শিসধ্বনিতে ভরিয়ে রাখে।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের ‘বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ আইন-২০১২’ তে উল্লেখ রয়েছে পাহাড়ি ময়না পাখিসহ কোনো ধরনের দেশি প্রজাতির পাখি কেউ খাঁচাবন্দী করে পালতে পারবেন না। বিভিন্ন দেশি প্রজাতির পাখি ধরা, খাঁচায় পোষা, হত্যা করা এবং এর মাংস খাওয়া দেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব অপরাধে জেল এবং জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। শহরের যেখানেই পাহাড়ি ময়না পাখিসহ দেশি প্রজাতির নানা পাখি খাঁচাবন্দী করে পালা হচ্ছে সেখানেই তৎপর স্থানীয় বন্যপ্রাণী রেঞ্জ। খবর পাওয়া মাত্রই তারা সেগুলো উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর পুনরায় বনের গভীরে অবমুক্ত করে থাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২২ 
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।