ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

অন্ধ্রপ্রদেশের ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ থালি

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
অন্ধ্রপ্রদেশের ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ থালি

কর্ণাটকা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও কেরালা— ভারতের এই পাঁচ রাজ্য ভৌগোলিকভাবে দেশটির দক্ষিণাংশে, এজন্য এগুলোকে বলা হয় সাউথ ইন্ডিয়া বা সংক্ষেপে ‘সাউথ’। এর মধ্যে তেলেঙ্গানা আগে অন্ধপ্রদেশের মধ্যেই ছিলো, ২০১৪ সালে আলাদা হয়ে যায়, ফলে দু’টি রাজ্যের খাবার, সংস্কৃতি, ভাষা প্রভৃতি প্রায় এক বলা চলে।


এ প্রতিবেদন খাবার নিয়ে, কাজেই সেখানে ফেরা যাক। সাউথ ইন্ডিয়ান রাজ্যগুলোর খাবার মোটামুটি একই— দোসা, ইডলি, উত্তাপম, সাম্বার প্রভৃতি।

শুধু স্বাদের পার্থক্য- কেউ ঝাল বেশি খায়, কেউ কম। কেউ টক বেশি, কেউ খায় না। এরপরও কিছু খাবারে রয়েছে তাদের অঞ্চল ও নিজস্ব ঐতিহ্যগত পার্থক্য। যেমন অন্ধ্রপ্রদেশের নিরামিষ থালি।  

খাবারের পরিবেশনেও রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিন্নতা। অন্ধ্রপ্র্রদেশে কলার পাতার ব্যবহার খুব বেশি। বেশিরভাগ খাবার তারা পরিবেশন করে কলাপাতায়। থালির ক্ষেত্রেও তাই। থালা থেকে থালি এলেও পরিবেশন করে কলাপাতায়।  
 
অন্ধ্রপ্রদেশের ভাষা তেলেগু হওয়ায় রাজ্যের বাসিন্দাদেরও তেলেগু বলে। খাবারের সঙ্গে তেলেগুদের খুব প্রিয় হচ্ছে নানা রকমের চাটনি। পাতে শুকনো ঝালের সঙ্গে তেঁতুল, কাঁচা আমের চাটনি, কোনো টক স্বাদের ফল দিয়ে বানানো বা ডাল ও বাদাম পিষে বানানো চাটনি পাউডার থাকবেই।
 
খাবার শুরু হয় কলাপাতায় বেড়ে দেওয়া গরম ভাতের সঙ্গে গাওয়া ঘি দিয়ে, সঙ্গে চাটনি পাউডার। দারুণ করে মেখে নিলে মনে হবে, পুরো ভাত এই দিয়েই সাবাড় করে দেই। কিন্তু ভুলেও তা করা যাবে না। কারণ, এরপরও রয়েছে অনেকে মন ভরানো পদ।
 
এরপর থালি অর্থাৎ কলাপাতায় যোগ হবে কারি পাতা দিয়ে ঘন ডাল। এক গাল ডাল মাখা ভাত, সঙ্গে এক কামড় পাপড়। অনেক খেতে হবে, এজন্য পেটটা ঠাণ্ডা রাখতে ঘোল আগেই খেয়ে নেওয়া যায় বা খাওয়ার মাঝখানে চুমুক দিয়ে।  

পাতের সামনে সাজানো থাকবে- নারকেল দিয়ে বিট ভাজা, ডাল আর তেঁতুল দিয়ে বানানো সাম্বার ও টমেটো আর তেতুলের রসম। সালাদে থাকে হরেক রকমের সবজি, শসা ও নারকেল। ঝোল ঝোল করে মেখে ফেলা হয়।  
আর হ্যাঁ, চাটনি তো রয়েছেই— পছন্দমতো নিয়ে নিলেই হলো। শেষপাতে মিষ্টি হিসেবে ক্ষীর আর ভালো হজমের জন্য হালকা টক দই।  
খাবেন কোথায়, এই তো? এমনিতে ভারতের এখন এমন অবস্থা, উত্তরের কাশ্মীরে বসে সাউথের কন্যাকুমারীর খাবার খাওয়া যায়। সেই জায়গা থেকে ভারতের যেকোনো শহরে অন্ধ্রপ্রদেশের ঐতিহ্যবাহী এ থালি পেয়ে যাবেন।
 
তবে সবচেয়ে ভালো হয়, অন্ধ্রপ্রদেশে এসে খেলে। যে অঞ্চলের খাবার সেখানে গিয়েই খাওয়া ভালো। অন্ধ্রপ্রদেশের যেকোনো পুরনো রেস্টুরেন্ট বা এমনি মোটামুটি মানের হোটেলেও নিরামিষ থালি পেয়ে যাবেন। এ রাজ্যে কোনো বন্ধু থাকলে তো আরও ভালো।
 
তবে একটি কথা কিন্তু অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে- তাদের অধিকাংশ খাবারই হবে টক।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad