ঢাকা: সম্পূর্ণ নতুন এক গন্ধ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একে ‘সাদা’ গন্ধ নামে অভিহিত করছেন তারা।
সাদা রঙ যেমন বিভিন্ন আলোর মিশ্রণ, তেমনি এই গন্ধ বিভিন্ন গন্ধের মিশ্রণ। এজন্যই একে ‘অলফ্যাক্টরি হোয়াইট’ বা ‘সাদা অনুভূতির গন্ধ’ বলা হচ্ছে।
আমরা প্রতিদিন যে অসংখ্য গন্ধ নিয়ে থাকি, তার প্রায় সবই ভিন্ন ভিন্ন পদার্থের মিশ্র গন্ধ। তবে বিভিন্ন গন্ধের পার্থক্য বুঝতে পারলেও আমরা তার প্রত্যেকটি আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারি না। যেমন- গোলাপ ফুলের গন্ধ ও চায়ের গন্ধ আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়, কিন্তু চায়ের উপাদানগুলোর গন্ধ বুঝতে পারি না।
সাতটি ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গের আলো একত্রিত হয়ে যেভাবে সাদা আলো তৈরি করে, তেমনি নিউরোলজিস্ট নোয়াম সোবেলের নেতৃত্বে একটি গবেষক দল ৪৩ রকম গন্ধের মিশ্রণ ঘটিয়ে এই ‘সাদা’ গন্ধ তৈরি করেছেন।
তবে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। ৪৩ রকম গন্ধ মেশালে তো এমনিতেই বিশেষ কোনো গন্ধ তৈরি হয়, তাহলে গন্ধ ‘আবিষ্কার’ হলো কীভাবে?
বিজ্ঞানীরা এর উত্তরে বলছেন, গোলাপ ফুলের গন্ধ যেমন এক ও অনন্য, ‘সাদা’ও তাই। এটি মানুষের মস্তিষ্কে আনকোরা নতুন এক গন্ধের অনুভূতি তৈরি করে, যার সঙ্গে পৃথিবীর কোনো গন্ধের মিল নেই। আরও বিস্তারিত বললে, মানুষের মস্তিষ্কে প্রতিটি মৌলিক গন্ধ একেকটি পৃথক ‘ইউনিট’ হিসেবে কাজ করে। সাধারণত জন্মের পর কয়েক বছরের মধ্যেই মানুষ তার আশেপাশের মৌলিক গন্ধের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যায়। এই মৌলিক গন্ধগুলোর মিশ্রণ ঘটিয়ে যেকোনো গন্ধ শনাক্ত করতে শিখি আমরা। বিজ্ঞানীদের মতে, ‘সাদা’ এমনই একটি মৌলিক গন্ধ, যা এর আগে পৃথিবীবাসীর নাকে প্রবেশ করেনি! তাই আপনি কখনোই এর গন্ধকে অন্যকিছুর সঙ্গে তুলনা করে বলতে পারবেন না, “ঐ গন্ধের মতো”।
একদল স্বেচ্ছাসেবীকে এই নতুন গন্ধ উপভোগ করতে দেওয়া হলে তারাও এর সংজ্ঞা দিতে পারেননি। তবে কেউ কেউ এর অনুভূতি ‘মৃদু’ ও ‘কোমল’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১২
সম্পাদনা: হাসান শাহরিয়ার হৃদয়, নিউজরুম এডিটর/আরআর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর