তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে উৎসাহ দিতেই প্রতিবছর ইমাজিন কাপ আয়োজন করে মাইক্রোসফট। এবছরও বিশ্বব্যাপী চলছে প্রতিযোগিতা।
৬ এপ্রিল বাংলাদেশ পর্বের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। এ বছর বাংলাদেশ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ‘বুয়েট ১০১’ দল।
তারা এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসেই মুঠোফোনে শরীরের কুশল জানা যাবে। আবার প্রিয়জনের কুশলও জানা যাবে। এ কাজে দরকার পড়বে একটি ব্যান্ড, যা আপনার ও অপর প্রান্তের মানুষের হাতে পরানো থাকবে।
বুয়েট দলের সদস্যরা হচ্ছেন- তামজিদ ইসলাম, বাসিমা ইসলাম, মোরশেদুল হক ও জাহিন মোস্তাকিম।
শুধুমাত্র উইন্ডোজ ফোনের জন্য তৈরি করা অ্যাপ্লিকেশন ‘হ্যাপি ওয়াচ’। অসুস্থ কেউ বাসায় থাকলে তার খোঁজ-খবর রাখা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। সারাক্ষণ অসুস্থ মানুষটিকেই ফোন দিয়ে বিরক্ত করতে হয়। কিংবা আমরা নিজেরাই সারাদিন প্রিয় মানুষটির জন্য অস্থিরতায় কাটাই।
সেসব বিষয় বিবেচনা করেই হ্যাপি ওয়াচ অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। এ সম্পর্কে বুয়েট দলের অন্যতম সদস্য তামজিদ ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “হার্ডওয়্যার হিসেবে মূল হলো- হ্যান্ড ওয়াচ অর্থাৎ ঘড়ি বা হ্যান্ড ব্যান্ডও বলা যেতে পারে। এটি যে কেউ হাতে পড়তে পারবেন। এই ঘড়িটিই সেন্সরের মাধ্যমে পালস রেট জেনে নেবে এবং সার্ভারে পাঠিয়ে দেবে। সেই সার্ভার থেকেই ডাটা চলে যাবে ব্যবহারকারীর কাছে। তখনই প্রিয় মানুষের শরীরের অবস্থা যিনি জানতে চান তিনি সব তথ্য জানতে পারবেন। ”
তিনি বলেন, “এর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। যদি ইন্টারনেট সংযোগে কোনো সমস্যা থাকে তখন সে অটো এসএমএস জেনারেট করে পালস রেট পাঠিয়ে দিতে পারবে। ”
এ প্রকল্পে হার্ডওয়্যার ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে- সেন্সর, কন্ট্রোলার, জিএসএম মোডিউল এবং সার্ভার।
হ্যাপি ওয়াচ সম্পর্কে তানজিম বলেন, “এটি লাইভ ডাটা দেবে। প্রতি ৫ মিনিট পর পর অ্যাপটি আপডেট দিতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে প্রতি মাসের গড় অবস্থানও জানতে পারবেন ব্যবহারকারী। এমনকি রোগীর অবস্থা যদি বেশি খারাপ হয় তখন তার প্রিয়জনের ঘড়িতে ইমার্জেন্সি অ্যালার্ম বাজা শুরু হবে। ”
অ্যাপটির খরচের বিষয়ে বুয়েট দলটির সদস্যরা বলেন, “এ সেবাটির জন্য খরচ হবে মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা। অথচ আমরা বর্তমান চিকিৎসায় এ সেবাটি নিতে অনেক টাকা খরচ হয়। ”
ইমাজিন কাপের বাংলাদেশ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলে বুয়েটের দলটি আগামী জুলাই মাসে রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে সেরা দল নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয় ২০১২ সালের আগস্ট মাসে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৩৫টি দল নিবন্ধন করে। প্রাথমিক নির্বাচনের পর মোট ১২টি দলকে ডাকা হয় নিজেদের উপস্থাপনার জন্য। এর মধ্য থেকে চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয় ৪টি দল।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৩
সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর
