ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২০ মে ২০২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

চট্টগ্রামে প্রথম আড্ডারু সম্মিলন

মনিরুল মনির | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০০, ডিসেম্বর ২৬, ২০১০
চট্টগ্রামে প্রথম আড্ডারু সম্মিলন

আড্ডা দিতে কে না ভালোবাসে? আড্ডার মাঝে মানুষের শত কষ্টও যেন নিমিষেই বিলীন হয়ে যায়, কিছুটা সময়ের জন্য হলেও। আর সেই আড্ডা যদি হয় কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী তথা সংস্কৃতিসেবীদের, তবে তো কথাই নেই।

সে আড্ডা হয় রসঘন, সৃজনশীল ও প্রাণবন্ত।

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শহর। ঐতিহ্যের এ শহরের নানা প্রান্তে নানা সময়ে বিভিন্ন চিন্তার মানুষের আড্ডা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এখান থেকে কেউ আলোর দ্যুতি ছড়াতে ছড়াতে বেরিয়ে পড়েছেন, কেউ টিকে আছেন, আর কেউ কান্তিহীন আড্ডা দিয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রামের চিহ্নিত কিছু আড্ডা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক কারণে বিখ্যাত। মনে দাগ কাটার মতো।

সবুজ হোটেল, বোস ব্রাদার্স, নভেলটি, চৌরঙ্গী, চিম্বুক, জলযোগ, সাধুর দোকান একটা সময় ছিল চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্যিক-নাট্যজনের আড্ডার স্থান। পরবর্তী সময়ে শিল্পকলা একাডেমী এবং বর্তমানে চেরাগির মোড় হচ্ছে আড্ডার অন্যতম স্থান। সন্ধ্যা হলে চেরাগীতে আড্ডারুদের ভিড় জমে।

এগুলোকে স্মরণ করতেই চেরাগি আড্ডা ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে  চেরাগি পাহাড় লুসাই ভবনের সামনে আয়োজন করে চট্টগ্রাম  আড্ডারু সম্মিলন।

বিনয় বাঁশি জলদাসের পুত্র বাবুল জলদাসের ঢোল বাজানোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ আড্ডার মধ্যে প্রদীপ প্রজ্বলন করে আড্ডার সূচনা করেন শিল্পকলার আড্ডারু অধ্য জাহাঙ্গীর কবির এবং কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান নাসিম।

অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল গান, আড্ডারু সংবর্ধনা, কবিতা পাঠ ও আড্ডা। সমগীত ও আরবিএস গণসঙ্গীত পরিবেশন করে। সম্মিলন উপলে আয়োজিত প্রদর্শনীতে ১১ জন শিল্পীর আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়।

সম্মিলনে মরণোত্তর সংবর্ধনা দেওয়া হয় চারজন আড্ডারুকে। তাঁরা হলেন ডা. কামাল এ খান, গল্পকার সুচরিত চৌধুরী, কবি সুনীল নাথ ও সাংবাদিক মুহাম্মদ ইদ্রিস। সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, কবি ওমর কায়সার, কবি স্বপন দত্ত ও ফাউজুল কবির।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও সৃজনে আড্ডা হচ্ছে রসদ, আড্ডা হারালে সে রসদ হারাবে। আড্ডা হবে সৃজনশীল, যেখান থেকে নতুন কিছুর সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রামে এ ধরনের আয়োজন ও গুণী সম্মাননা নতুন প্রজন্মকে প্রেরণা যোগাবে। আড্ডা জীবনের জন্য, সৃজনের জন্য ও বেঁচে থাকার জন্য।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বাদল ও নির্বাহী সদস্য মৃন্ময় বিশ্বাস। এ আয়োজন উপলক্ষে খালিদ আহসানের প্রচ্ছদে ‘আড্ডা’ শিরোনামে একটি সংকলন বের হয়।

অনুষ্ঠানে র‌্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন সংগঠনের নির্বাহী সদস্য প্রবীর দাশ। কবিতা আবৃত্তি করেন রাশেদ হাসান ও মিলি চৌধুরী। গান পরিবেশন করেন বিমল বাউল (কুষ্টিয়া), সঞ্জীত আচার্য, কল্যাণী ঘোষ, কান্তা নন্দী, মানস পাল চৌধুরী, ইকবাল হায়দার।

বাংলাদেশ সময় ২২৪৫, ডিসেম্বর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।