অনলাইনে দেশে, কখনো দেশের বাইরে থাকা অনেকের সঙ্গে কথা হয়। একটা ব্যাপার অনেকটা আমার স্বভাবের মতো দাঁড়িয়ে গেছে।
‘আমাদের এটা ছোট্ট শহর, চলে আসো। রিক্সায় পুরো শহরটা ঘুরে দেখতে পারবে মন খুলে। আর শহরের বাহিরটা তো আছেই। সেখানে আরো সবুজ। আবহাওয়াটাও চমৎকার। আর বৃষ্টি ভালোবাসলে তো কথাই নেই। ’ কথাগুলো বলার সময় একটা একটা গর্ব হয়। সেটাও মনে হয় আরেকটা কারণ।
হ্যাঁ। সিলেট ছোট্ট শহর। বিশাল ঢাকায় যেমন ঠিক কোনটা যে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র তা নিয়ে কাড়াকাড়ি লেগে যায় মানুষজনের, এখানে তেমন কোন সুযোগ নেই। ব্যস্ততম এলাকাগুলো একেবারে গায়ে গায়ে লেগে। মাইলের পর মাইল না বরং মিনিট কয়েকের পায়ে হাঁটা দূরত্ব। এ শহরেই আমার বেড়ে ওঠা। শহরের ঠিক পাশেই উপশহর নামের জায়গায়; উপশহরে বেড়ে ওঠার একটা সুবিধা আছে। একই সাথে একপাশে গ্রাম আর আরেকপাশে শহর দুটোরই ঘ্রাণ পাওয়া যায়। আমি তাই শহরটাকে যেমন চিনি, তেমনি চিনি গ্রামটাকেও। তবে এখানে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে অন্যরকম একটা অনুভূতি একটু একটু করে জমা হয়েছে। সেটা ঠিক মন খুলে গর্ব করে বলার মতো না। আর কতদিন এমন গর্ব করে বলা যাবে কে জানে।
যেটা বলছিলাম, শহরের পাশেই উপশহর। উপশহরের পর গ্রাম। কয়েকপা ফেলেই চলে যেতাম মাঠে। পরিবেশটাই এমন ছিল যে ওখানে নানাবয়সী একেবারে রাতে বিছানা ভেজানো পিচ্চি থেকে শুরু করে মাথায় টাক পড়তে শুরু করা যুবক সবারই ভিড় জমতো। কখনো ফুটবল, কখনো ক্রিকেট। ক্রিকেটটাই বেশি চলতো।
এরপর একসময় ওই মাঠগুলো হারিয়ে গেল। ওখানে চারপাশে দেয়াল উঠলো। দেয়ালের ভিতর কলাম উঠলো। কলাম থেকে কলাম বরাবর আবার দেয়াল। দেখতে দেখতে একসময় যেগুলো আমাদের অবসর কাটানোর মাঠ ছিলো ওগুলোয় একটা পর একটা অট্টালিকা উঠতে থাকলো। এমন প্রায়ই হয়, যার অট্টালিকা সে হয়ত সুদূর কোন দেশে থাকে, আসে বছর দু‘বছরে একবার, কখনো তাও আসে না। আমাদের তাই লম্ফঝম্প বন্ধ। হারিয়ে যেতে লাগলো সবাই মিলে আড্ডার স্থানটাও। পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের আলোয় সোনালি একটা মায়াময় আভা থাকে। ঐ আলোয় ঘাসের মাঝে মাঝে সোনালি ধুলো, আর সেখানে প্রাণ খুলে একসময় সবাই আড্ডা দিতো, দিনগুলো চোখের সামনে একটু একটু করে হারিয়ে গেছে।
আগে যেখানে খেলার মাঠ ছিল এখন সেখানে এপার্টমেন্ট। পূবে তাকালে সূর্যোদয় বা পশ্চিমে সূর্যাস্ত দেখার সব ফাঁকফোকরগুলো একে একে সব বন্ধ হয়ে এসেছে। কোন একটা বহুতল দালানে উঠলে হয়ত সে সৌভাগ্য মেলে। কিন্ত তা কয়জনের ভাগ্যে ধরে? আকাশের কোণে ঈদের চাঁদের খোঁজও তাই বন্ধ হয়েছে। শহর উপশহর পেরিয়ে গ্রামে গেলে অবশ্য চোখে পড়ে এখনো।

রাস্তার পাশে স্কুল আছে। কিন্তু স্কুলের পাশে মাঠ নেই। এপার্টমেন্টের মতো করে ডিজাইন করা দালানের বাইরে সাইনবোর্ড লাগিয়ে সেটাকে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। ছোট একটা বাচ্চাকে কিছু দিলে সে ওটা হাতে নেয়, ওটার দিকে কতক্ষণ হা করে তাঁকিয়ে থাকে। তারপর মুখে ঢুকায়। ওটার স্বাদ নেয়। রাস্তায় একটা রিক্সার বেল বাজলে, গাড়ির হর্ণ বাজলে, রাখাল গরু নিয়ে গেলে ফিরে তাঁকায় ওদিকে। পুরো পৃথিবীটারই মনযোগী ছাত্র ওরা। ওদের একটু খেয়াল করলেই ব্যাপারটা বোঝা যায়, ওরা ওদের প্রতিটা ইন্দ্রিয়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় তার চারপাশের জগতটাকে চেনার জন্য। এটাই ওদের শেখার ধরন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের শেখা বা আগ্রহের ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। কিন্তু কম বয়সে যা শেখে তার প্রভাব অধিকাংশ মানুষের মাঝে থাকে সারা জীবন। আর এ সময়ে আমরা আমাদের বাচ্চাগুলোর সাথে কি করছি?
তাদের পাঠাচ্ছি দমবন্ধ সব খাঁচার ভিতর। বাচ্চারা না পাচ্ছে বাসার সামনে উঠোন, না পাচ্ছে স্কুলে টিফিন আওয়ারে একটু মন খুলে লাফঝাঁপ করার সুযোগ। । তারা ঘুম থেকে উঠে, তারপর আধো আধো ঘুমে স্কুল। ছয়টা সাতটা আটটা ক্লাসের পর বাসা। প্রাইভেট পড়তে দৌড়ানো। তারপর ফিরে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে কম্পিউটার গেমস হয়ত। তারপর পড়া। তারপর ঘুম। এইই জীবন তাদের। অধিকাংশের বাস ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে। চাইলেও মুক্ত হট্টগোলের পরিবেশে নিজেদের মেলে দেয়ার সুযোগ নেই তাদের। স্কুলটাই ভরসা। সেখানেও । অপূরণীয় এ ক্ষতিটা আমরা খুব সহজভাবে মেনে নিয়েছি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো যারা অনুমোদন দিয়েছেন তাঁরা তো শিক্ষিত মানুষজনই। তাঁরা কেন এ ধরনের অনুমোদন দেন তা আমি ঠিক বুঝতে পারি না।
একসময় যেগুলোয় সুন্দর সময় কাটানো যেতো সবাই মিলে এখন সেখানে হাঁটার সময় মাঝে মাঝে মনে হয় পুরান ঢাকায় এসে পড়লাম নাতো! দালানগুলো সব গায়ে গায়ে লেগে আছে। সেটব্যাক মানার কোন বালাই নেই। দালানগুলো লেগে আছে গায়ে গা ঘেঁষে। তাই আলো হাওয়ার চলাচলও নেই। দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। বাচ্চাগুলো যখন মাথার উপর গ্রিলে ঘেরা বারান্দা ধরে দাঁড়িয়ে থাকে তখন সত্যি বলতে কি ফার্মের মুরগির মতো অসহায় মনে হয় ওদের দেখে। গেমস আর গ্রিল ধরে মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা- এই তাদের অবসর। তাও এমন যদি হত যে ওই রাস্তা ধরে হাঁটার সময় দালানগুলোর স্থাপত্যশৈলী উপভোগ করা যায়। তাও তো না। সবগুলো গণহারে পাশাপাশি বসানো মিষ্টির বাক্সের মতো। অথচ এরই মাঝে উলুবনে মুক্তার মতো দু’একটা দেখতে ভালো দালান চোখে পড়ে যায় তাহলে সেটার দিকেই লোকজন পথে হাঁটার সময় ফিরে ফিরে তাকায়। তাহলে এবার ভাবুন তো, অধিকাংশ দালানকোঠাই যদি দৃষ্টিনন্দন হতো তাহলে শহরের চেহারাটাই কি পুরোপুরি পালটে যেত না?
হ্যাঁ, অনেকে অভিযোগ করবেন ‘ভালো দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যের দালান কে না চায়! কিন্তু চাইলেই কি হবে? স্থপতি বা ভালো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে ডিজাইন করানো তো আর একেবারে নিখরচা ব্যাপার নয়। তাঁদেরকে টাকা ঢালতে হয়। তারচেয়ে বরং নিজে বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে অথবা মিস্ত্রিকে দিয়েই একটা ডিজাইন করে নিলে অনেক টাকা পকেটে থেকে যায়। সেটাই কি ভালো না?’
হ্যাঁ। অভিযোগের প্রথম অংশের সাথে একমত। টাকা ঢালতে হয়। কিন্তু আপনাকে ভালো কিছু পেতে গেলে তো একটু খরচ করতেই হবে। আর যে টাকাটা ঢালছেন সে টাকাটা কিন্তু অদৃশ্যভাবে আপনার পকেটেই ফিরছে পুনরায়। বৃথা যাচ্ছে না। দেখা যাক কিভাবে ব্যাপারটা ঘটে।
অধিকাংশ বাসাবাড়িতে চোখ ফেললেই স্পেশালিস্টকে দিয়ে কাজ না করানোর ফলাফলটা দেখে আসা যায়। এ ঘরে প্রাকৃতিক আলো আসে, তো ও ঘরে আসে না। খোলামেলার বদলে দমবন্ধ গুমোট করিডর ধরে যেতে হয় এক ঘর থেকে আরেক ঘরে। সে ঘরে আবার হয়ত প্রাকৃতিক বাতাস আসে না। ফলাফল ভ্যাপসা অন্ধকার বাসা আর স্বাভাবিকভাবেই সারাদিন লাইট ফ্যানের সুইচ অন। এবার খারাপ ডিজাইনের কারণে বিশ ত্রিশ বছরে সবমিলিয়ে কি পরিমাণ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসছে তা হিসেব করুন। আঁতকে উঠবেন টাকার অংকে। আর অন্ধকার বাজে কৃত্রিম আলো বাতাসের পরিবেশে থাকার কারণে মানসিক ক্লেশ, ওটার লসটা তো আর অঙ্ক দিয়ে হিসেব সম্ভব না। এখানেই শেষ নয়। প্রাইভেসির বালাই নেই ঘরগুলোর মাঝে। আর নান্দনিকতার প্রশ্ন তো থাকছেই।
অপ্রয়োজনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বা মিস্ত্রিরা খুঁটি বসিয়ে রাখছে ঘরের এখানে ওখানে। পাঁচতলা একটা দালানে একেকটা খুঁটির জন্যই বিশাল খরচ। রড পাথরের দামটা তো আর মিস্ত্রির পকেট থেকে আসে না। ওরকম কয়েকটা খুঁটি ঘরে থাকলে সেখানেই বিশাল অপচয় হয়ে যাচ্ছে যার দালান তার পকেট থেকে। কিন্তু তিনি জানেনই না দক্ষ ডিজাইনারকে দিয়ে ডিজাইনটা করালে এ অপচয়গুলো রোধ করা যেত।
আমরা যেসব ঘরবাড়িতে থাকি সেগুলোর জন্য একটা ভালো পরিকল্পনা কতটুকু প্রয়োজন সে আলোচনায় উইনস্টন চার্চিলের একটা কথা উল্লেখ করা যায়। কথাটা এই, ‘আমরা প্রথমে আমাদের বিল্ডিংগুলোকে ডিজাইন করি, তারপর সেগুলো আমাদেরকে ডিজাইন করে। ‘ স্থাপত্য আমাদের চারপাশের পরিবেশ কি করতে পারে? এগুলো মানুষকে কতটুকু প্রভাবিত করতে পারে? এগুলো মানুষের ব্যাপারে, সময় ও স্থানের ব্যাপারে কি তথ্য দিতে পারে, দেশের ইমেজকে কিভাবে আরো ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে, স্থাপত্য কি অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে অথবা অপরাধপ্রবণ ও অস্থির সমাজকে তুলনামূলক ভালো ও নিরাপদ সমাজে পরিবর্তন করতে পারে এ ব্যাপারগুলো বারেবারেই আলোচনার আশা উচিৎ এবং তা কাজে বাস্তবায়িতও হওয়া উচিৎ।

যাদের কাছে ব্যাপারটা একটু কঠিন ঠেকছে তাদের জন্য পরিবেশ কিভাবে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে তার সহজ দু তিনটে সূত্র ধরিয়ে দিই, বিষণ্ণ মনে নদীর সামনে গেলে এর প্রবাহমানতা মন থেকে বেদনাকে ধুয়ে নেয়। আমরা হালকা অনুভব করি। বিশাল সমুদ্রের সামনে বা রাতের খোলা আকাশের নিচে যখন দাঁড়াই তখন বিশালতার অনুভূতি আমাদের জুড়িয়ে দেয়। হয়তো মহৎ আর উদার হবার শিক্ষাও দেয় কবিতার মতো। এর বিপরীতটাও আছে। বদ্ধ গুমোট আবছা একটা ঘরে, যেখানে প্রয়োজনীয় আলো বাতাস আসতে পারে না সেখানে বসে থাকুন, দেখবেন মনটাও আপনার ঘরের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করে বদ্ধ মনে হতে শুরু করেছে। আর তারসাথে আপনার শরীরটাও কেমন জানি অস্বস্তি করছে। তবে ব্যাপারটা এখানেই থেমে থাকে না। শহরের একটা বাড়ি তা যেমনই হোক না কেন নিজে নিজে কখনো তা বেড়ে ওঠার জন্য ভালো পরিবেশ বা প্রয়োজনীয় উপকরণ যোগান দিতে পারে না। বাইরে হাঁটা চলার জন্য সুন্দর রাস্তা, রাস্তার পাশে ফুটপাথ, যেখানে অন্তত দুজন গল্প করে করে পাশাপাশি হাঁটা যায়, খেলাধুলা আড্ডার জন্য কিছু মাঠঘাট, পুকুর দিঘীর প্রয়োজন আছে। সেগুলোর দায়িত্ব বর্তায় নগর পরিকল্পনাবিদদের উপর। শহর বা এর বাইরের দিকে হাঁটার সময় প্রায়ই আপনার মনে হতে পারে পৃথিবীতে বুঝি নগর পরিকল্পনা বলে কোন বিষয়ই নেই। এগুলো নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথাও নেই।
আমাদের দেশে কিছু তৈরির আগে মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের না আছে অঢেল পরিমাণ জমি, না আছে কাড়ি কাড়ি টাকা। তাই একবার আমরা কষ্টেসৃষ্টে দালানকাঠামো বা রাস্তাঘাটগুলো যেভাবে সাজাই তা বারেবারে চাইলেই ইচ্ছেমতো পরিবর্তনের সুযোগ নেই। সীমাবদ্ধতা অনেক। একবার যেখানে একটা ভিত্তি গড়ে যায় তা সাধারণত বহু বছরের জন্য স্থায়ী হয়েই গড়ে ওঠে। তাই আমাদের স্বল্প পুঁজি, স্বল্প জমিসহ সব সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখেই যা গড়ার গড়ে তুলতে হবে। দেশের অন্য অনেক স্থানের মতোই এখানকার মানুষজন এখনো স্থাপত্য, স্থপতি এ শব্দগুলোর সাথে ভালোভাবে পরিচিত নয়। ক্ষতি যা হবার সামগ্রিকভাবে আমাদের দেশেরই হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এগুলো আলোচনায় নিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশিদের মতো আচরণ করতে শেখে, মরুভূমির মানুষ ওদের মতো, শীতের দেশের লোকজন শীতের দেশের মানুষের মতো। এমনকি জাতিগত ত্বকের রংটা পর্যন্ত নির্ধারিত হয় পরিবেশ থেকে। সবাই-ই নিজের ভৌগলিক পরিবেশ থেকে প্রভাবিত। মানুষের এখন ক্ষমতা আছে চারপাশের পরিবেশটা নিজের মতো করে সাজিয়ে নেবার। ক্ষমতা আছে ধ্বংসেরও। আমরা যেমন পরিবেশ গড়ে তুলবো, সেটা আমাদের বাসাবাড়িতেই হোক আর রাস্তাঘাট স্কুল কলেজ হাট বাজারেই হোক তাঁর প্রভাব আমরা এড়াতে পারবো না। ভালো পরিকল্পনার একটা বাসা বা শহরে থাকার গুরুত্ব এখানেই।
ভেবে দেখুন, শুধু কিছু ইটপাথরের দেয়াল দিয়ে যেমন একটা জেলখানা হয়ে যেতে পারে, তেমনি শেরে বাংলানগরে সংসদ ভবনের মতো জাতীয় গর্বের একটা ডিজাইনও দাঁড়িয়ে যেতে পারে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মানুষের যেমন মাথায় প্রথম একটা পাকা চুল আবিষ্কার করে মানুষ যখন অনাগত বার্ধক্য অসহায়ত্বের ভয়ে একবার হলেও থমকে যায় শহরের এমাথা থেকে ওমাথা বা কখনো তারও বাইরে পা ফেলে আমার মনের পর্দায় প্রিয় শহরটার ঐ বার্ধক্যের ছবি মাঝে মাঝে উঁকি দেয়। আপনি দিনের শেষে বাসায় ফিরে যেখানে একটু বিশ্রাম নেবেন সেখানে ইলেক্ট্রিক বাল্বের আর সিলিং ফ্যানের যান্ত্রিক ঘূর্ণনের বদলে দখিনা একটু আলো-হাওয়া চাইতেই পারেন। মনে হতে পারে বাচ্চাটাকে কোলে করে একটু হেঁটে আসি আসেপাশে কোথাও, সেখানে পাড়ার পুরাতন বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডাও মেরে আসলাম না হয়। রাতে ফেসবুকে বসে আমার মতো আপনারও ইচ্ছে হয়ত হয় আপনার কোন বন্ধুকে আপনার সুন্দর শহরটা ঘুরিয়ে দেখাতে। আমার শহর- আপনার শহর, আমাদের পুরো বাংলাদেশ এমন প্রাণবন্ত কিছু ছবিতে ভরে উঠতে পারে একদিন। এবং এর সবই সম্ভব। এখনো সম্ভব।
আমিনুল করিম মাসুম: নবীন স্থপতি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৩
এমজেএফ/জিসিপি