ঢাকা, সোমবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২, ২৩ জুন ২০২৫, ২৬ জিলহজ ১৪৪৬

ফিচার

গরীব মানুষ মারতে হইলে হরতাল

শফিক শামীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩০, ডিসেম্বর ৭, ২০১৩
গরীব মানুষ মারতে হইলে হরতাল

ঢাকা: ভাই ব্যবসা হইবো ক্যামনে। লোকজন না আইলে বেচুম কাগো কাছে।

লোকজন আইলেতো বেচাকেনা হইবো। শুধু রিকশাওয়ালা ও গাড়ি স্টাফদের কাছে বেচতে হইতাছে। তাতে কি চলে। এইভাবে গরীব মানুষ চলবো কিভাবে।

বিক্রয় কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে, বেঁচাকেনা নেই, নিশ্বাস ফেলে সহজ সরল ভাষায় কথাগুলো বললেন ফলের রস ব্যবসায়ী আমির হোসেন রাজু (২৩)।

আমির বলেন, অভাবের কারণে এলাকা থেকে বাবা-মাকে নিয়ে ঢাকায় এসেছি। ঢাকায় চলতে হইলে কত টাকা লাগে তাতো জানেন।

হরতাল, অবরোধ না হইলে ৫০০/৬০০ টাকা লাভ হইতো। বাবা-মাকে নিয়ে ভালই থাকতাম। এখন ১৫০/২০০ টাকা থাকে এই টাকায় কি সংসার চলে।

ফলের রসের ব্যবসা করি। এই সব আসল ফল। সব কিছুর তো দাম বেশি তাই বেশি লাভ করতে পারি না। লাভ কম করলেও মান‍ুষরে আমি এক নম্বর ফলের রস খাইতে দেই। এই রস পেঁপে, আপেল, কমলা, মালটা, আনার, চিয়ারী ফল, ভুসি, তুতমাইর বিচি, রুহূ আফজা, ‍ট্যাংক, চিনি, গুর, পানি দিয়ে তৈরি করা হয়। যাত্রবাড়ী এলাকায় আমার একটা সুনাম আছে।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় রস বিক্রি করি। খাওয়ার জন্য অনেকে লাইনে থাকতো। অনেক জায়গা থেকে আমার এখানে ফলের রস খাইতে আসে। এখন হরতালতো, তাই কেউ আসে না।

আবেগ নিয়ে বললেন হরতালে সব সুনাম ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। দেশের যে অবস্থা তাতে মনে হইতেছে গরীব মানুষ আর বাঁচবো না।

এই হরতাল, অবরোধে আপনার কি কোনো ক্ষতি হয় এমন প্রশ্ন করতে আমির হোসেন বলেন, কি কন ভাই, হরতালতো গরীব মানুষ মারার কল। গরীব মানুষ মারতে হইলে হরতাল। এই হরতালে বড় লোকরা ঘর থেকে বের হয় না। আর গরীব মানুষ পেটের তাগিদে কাজের উদ্দ্যেশে বের হইবো। আর বোমা, ককটেলের আঘাতে মরবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।