শ্রীমঙ্গল: ডাবের পানি গরমের প্রাকৃতিক অমৃত রস। এক চুমুকেই শরীরে চলে আসে সতেজতা।
আমরা পথ চলতে গিয়ে মাঝে মধ্যে ডাব বিক্রি করতে দেখি। কিন্তু উঁচু ডাব গাছ থেকে ডাব পেড়ে আনা মোটেই সহজসাধ্য নয়। এজন্য রয়েছে অন্য একটি পেশার লোক। ডাবওয়ালা বলা হয় তাদের। তার কাজই হলো গাছে থেকে ডাব পেড়ে বাজারে ডাব-বিক্রেতার কাছে বিক্রি করা। এভাবেই ডাবের সঙ্গে নিত্য এক সখ্যতা তৈরি হয় তাদের।
এমনই একজন ব্যক্তি সারোয়ার মিয়া। এখন বয়স তার প্রায় ৫০। পনের বছর বয়সে বাবার হাত ধরে প্রথম গাছে চড়া শেখা। তারপর ধীরে ধীরে মাঝারি আকারের গাছগুলো চড়ে সবশেষে উঁচু ডাবগাছের সঙ্গে জীবন ও জীবিকার মেলবন্ধন রচিত হয়েছে তার।
তিনি থাকেন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিরাইমপুর এলাকায়। স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়ের নিয়ে বড় সংসার তার। প্রতিদিনের আয় দিয়ে চলে সংসার। তবে কথা প্রসঙ্গে তিনি সংসার ছোট রাখার সুফলের কথা জানান। মানুষের কথায় সংসার বড় করে এখন তিনি হিমশিম খাচ্ছেন -এ কথাটি অকপটে স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।
সারোয়ার মিয়া বলেন, প্রতিদিন ডাবের খোঁজে ঘর থেকে বের হই। নির্ধারিত বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে ডাবগাছে উঠে প্রতিটি ডাব কিনি। তারপর রিকশা বা ঠেলাগাড়িতে করে সেই ডাবগুলো নিয়ে বাজারের ডাববিক্রেতার কাছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করি। এই ডাব বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় দুশ’ থেকে তিনশ’ টাকা লাভ হয়।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমানে তরমুজ এসে আমাদের ডাবের বাজার কিছুটা নষ্ট করে দিয়েছে। মানুষ না বুঝে বিষাক্ত তরমুজ দাম দিয়ে কিনে নিয়ে খাচ্ছে। অথচ আমরা অনেক কষ্ট করে উঁচু গাছের মাথায় উঠে তারপর ডাব পাড়ি। আমাদের সতেজ টাটকা এই ডাবের পানি মানুষ কিনতে চাচ্ছে না।
ডাবের পানির উপকারিতা অনেক। এতে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, কার্বোহাইড্রেট প্রভৃতি উপাদান রয়েছে। ডাবের পানিতে প্রতি ১০০ গ্রামে ১৬.৭ ক্যালোরি তথা ৭০ কিলো জুল খাদ্যশক্তি রয়েছে।
ক্ষেত্রবিশেষে এটি রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধকের কাজ করে থাকে। ডায়রিয়া, আলসার, অ্যাসিডিটি, মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। ডাবের পানিতে এন্টিসেপটিক গুণ থাকাতে কাটা-ছেড়া জায়গায় ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫
এএ