ঢাকা: বাদাম অনেকের কাছেই সুস্বাদু খাবার। স্ন্যাকস হিসেবেও বিভিন্ন রকমের বাদাম কিন্তু মন্দ নয়।
আন্তর্জাতিক স্ন্যাকস ইন্ডাস্ট্রিজের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর স্ন্যাকস বিক্রির হার কমেছে ১.৭ শতাংশ। আর বিভিন্ন রকমের বাদামের বিক্রি বেড়েছে ৬.৬ শতাংশ।
এ থেকেই বোঝা যায় মানুষ আগের তুলনায় স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হয়েছে ব্যাপক মাত্রায়। তবে চলুন জেনে নিই বিভিন্ন রকম বাদমের পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা সম্পর্কে-
পেস্তা বাদাম
পুষ্টি উপাদান
পেস্তা বাদামে রয়েছে উচ্চমানের এন্টি-অক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম, যা স্নায়ুর বিকাশে সহায়তা করে। ১০০ গ্রাম পেস্তা বাদামে রয়েছে ৫৬২ কিলোক্যালরি। ৩০ গ্রাম পেস্তা বাদামে থাকে ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম চর্বি ও ৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
গত বছর স্প্যানিশ একটি গবেষণায় দেখা যায়, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যেসব ব্যক্তি দিনে ৬০টি পেস্তাবাদাম খেয়েছেন তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা লক্ষণীয় মাত্রায় কমেছে।
আমন্ড
পুষ্টি উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম আমন্ড বাদামে রয়েছে ৫৭৬ কিলোক্যালরি। এতে রয়েছে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম। ৩০ গ্রাম আমন্ড বাদামে পাওয়া যাবে ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ গ্রাম চর্বি ও ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
আমন্ড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা স্ন্যাকস হিসেবে প্রতিদিন উচ্চমানের কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ মাফিনের পরিবর্তে ৪২ গ্রাম আমন্ড খেয়েছেন তাদের রক্তে ক্ষতিকারক চর্বি ও উচ্চরক্তচাপ কমেছে তো বটেই, সঙ্গে ঝুঁকি কমেছে হৃদরোগের। কারণ, এতে রয়েছে মনোআনসাচ্যুরেটেড ফ্যাট যা কোলেস্টেরল কমায়।
কাজু বাদাম
পুষ্টি উপাদান
কাজু বাদামে রয়েছে উচ্চমানের কপার, যা স্নায়ুর পক্ষে সহায়ক। এটি হাড় মজবুত করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ১০০ গ্রাম কাজু বাদামে রয়েছে ৫৫৩ কিলোক্যালরি। ৩০ গ্রাম কাজু বাদামে রয়েছে ৫ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম ফ্যাট ও ৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
যুক্তরাষ্ট্রের হার্বাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যেসব নারী সপ্তাহে ২৮ গ্রাম কাজুবাদাম খান তাদের পিত্তাশয়ে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ২৫ শতাংশ। রক্তে চর্বির মাত্রা বেড়ে গেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাজুবাদাম কোলেস্টেরলও কমায়।
মেকাডামায়া
পুষ্টি উপাদান
অস্ট্রেলিয়ান এ বাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক। ১০০ গ্রাম মেকাডামায়াতে রয়েছে ৭১৭ কিলোক্যালরি। ৩০ গ্রাম মেকাডামায়াতে রয়েছে ২ গ্রাম প্রোটিন, ২২ গ্রাম ফ্যাট ও ৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
মেকাডামায়া স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা যায়, যারা তাদের খাদ্যতালিকায় মেকাডামায়া যোগ করেছেন তাদের রক্তের চর্বির মাত্রা কমেছে লক্ষণীয়ভাবে।
হ্যাজেলনাট
পুষ্টি উপাদান
হ্যাজেলনাটে রয়েছে ফলেট, মনোআনসাচ্যুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ই, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ। প্রতি ১০০ গ্রাম হ্যাজেলনাটে রয়েছে ৬২৮ কিলোক্যালরি। এছাড়াও ৩০ গ্রাম হ্যাজেলনাটে পাবেন ৩ গ্রাম প্রোটিন, ১৭ গ্রাম চর্বি ও ৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
হ্যাজেলনাট হৃদরোগ ও জন্মগত ত্রুটি রোধ করে। ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হ্যাজেলনাট রক্তে চর্বির মাত্রা কমায়।
পিক্যান
পুষ্টি উপাদান
পিক্যানে রয়েছে উচ্চমানের এন্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও মনোসাচ্যুরেটেড ফ্যাট। প্রতি ১০০ গ্রাম পিক্যানে রয়েছে ৬৯০ কিলোক্যালরি। ৩০ গ্রাম পিক্যানে রয়েছে ৩ গ্রাম প্রোটিন, ২১ গ্রাম চর্বি ও ৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা যায়, মেনোপোজ হয়েছে এমন নারী, যারা নিয়মিত পিক্যান খান তাদের স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যুঝুঁকি কমেছে ৬০ শতাংশ।
আখরোট
পুষ্টি উপাদান
আখরোটে রয়েছে প্রচুর এন্টি-অক্সিডেন্ট। প্রতি ১০০ গ্রাম আখরোটে রয়েছে ৬৫৪ কিলোক্যালরি। ৩০ গ্রাম আখরোটে পাওয়া যাবে ৪ গ্রাম প্রোটিন, ১৮ গ্রাম চর্বি ও ৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
আখরোট ধমনির ব্লকেজ পরিষ্কার করে। ২০০৬ সালের একটি স্প্যানিশ গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, আখরোট অলিভ অয়েলের মতোই উপাকারী। এটি চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর ধমনির প্রদাহ ও অক্সিডেশন রোধ করে।
ব্রাজিল নাট
পুষ্টি উপাদান
ব্রাজিল নাটে রয়েছে সেলেনিয়াম যা কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে। ১০০ গ্রাম ব্রাজিল নাটে রয়েছে ৬৫৬ কিলোক্যালরি। এছাড়াও ৩০ গ্রাম ব্রাজিল নাটে রয়েছে ১৯ গ্রাম ফ্যাট, ৪ গ্রাম প্রোটিন ও ৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।
উপকারিতা
ব্রাজিল নাট ডিম্বাশয়ের শক্তি বর্ধনে সহায়তা করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৫
এএ