ঢাকা: উত্তর যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের রাজপথ। পনেরো বছর বয়সী এক কিশোর তার ছোট ভাইকে কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
ছোট ছেলেটির নাম ব্রেডেন গান্দি। সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত সে। তাকে কাঁধে করে হেঁটে চলেছে তারই বড় ভাই হান্টার গান্দি। টানা তিনদিন ধরে হেঁটে ৫৭ মাইল পেছনে ফেলে পৌঁছেছে অ্যান আর্বর শহরে।
তবে কোনো রেকর্ড গড়তে নয়, ভাইকে কাঁধে নিয়ে এভাবে পদচারণার মূল কারণ সেরিব্রাল পালসি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি।
সাধারণত শিশু গর্ভাবস্থায় থাকার সময় বা জন্মের পর মস্তিষ্ক কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই রোগ দেখা দেয়। এর ফলে হাঁটু, কোমর, মেরুদণ্ড বা ঘাড়ের মাংসপেশী শক্ত হয়ে যায় ও শিশুর স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যাহত হয়। ব্রেডেন গান্দি এ রোগেরই স্বীকার।
হান্টার ব্রেডেনকে পিঠে চড়িয়ে শুক্রবার (০৫ জুন) সকালে মিশিগানের লামবার্টভিল (Lambertville) থেকে হাঁটা শুরু করে ও রোববার (০৭ জুন) বিকেল চারটায় তারা অ্যান আর্বর (Ann Arbor ) শহরের ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে পৌঁছে। সেখানে তাদের পরিবার ও বন্ধুরা অপেক্ষা করছিলেন।
দুই ভাইয়ের সাড়া জাগানো এই দীর্ঘ দূরত্বের পথচলা এ নিয়ে দ্বিতীয়বার। গতবছর একইভাবে হান্টার ব্রেডেনকে নিয়ে এই অঙ্গরাজ্যের বেডফোর্ড পৌরসভার টেম্পারেন্স থেকে হেঁটে অ্যান আর্বরে আসে।
হন্টার জানান, এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য অর্থ তোলা নয়, উদ্দেশ্য রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি।
তবে শুধু জনসচেতনতাই নয়, হান্টার এ উদ্যোগের মাধ্যমে ব্রেডেনের স্কুলে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ খেলার মাঠ তৈরির জন্য দুই লাখ মার্কিন ডলার অর্থও তুলেছেন। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ।
রাবারের মেঝে, সিঁড়ির বদলে ঢালু স্লোপ এবং আনুষঙ্গিক নানা উপকরণে তৈরি বিশেষ খেলার মাঠে তার ভাইয়ের মতো আরও শিশুরা যেন ভালোভাবে সময় কাটাতে পারে সেজন্যই এই অর্থের যোগান।
হান্টার ও ব্রেডেনের মা ডানিয়েল গান্দি জানান, তার চার সন্তানই এ উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত।
ডানিয়েল আরও জানান, হান্টার ছাড়াও তাদের বোন কেরাগেন ও ছোট ভাই কেলেনসহ তাদের অনেক বন্ধুই এই পুরো পথে তাদের সঙ্গে হেঁটেছে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৫
এএ