ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

রূপকথার ঘুমকুমারীর দেহাবশেষ ইথিওপিয়ায়! (ভিডিওসহ)

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
রূপকথার ঘুমকুমারীর দেহাবশেষ ইথিওপিয়ায়! (ভিডিওসহ)

ঢাকা: ঘুমকুমারী ঢলে পড়েছে মৃত্যুঘুমে। হাতের উপর চিবুক।

গায়ে ঝলমলে গহনা ঠিকরে বেরিয়ে আসছে দ্যুতি। এটা ছিলো রূপকথার গল্প। কিন্তু এবার মিলেছে সত্যিকারের ঘুমকুমারী!

উত্তর ইথিওপিয়ার অকসামে মাটি খনন করে পাওয়া গেছে এমনই এক ঘুমকুমারীর দেহাবশেষ। প্রায় দুই হাজার বছরের পুরোনো এই কবরে শায়িত ঘুমকুমারীর অস্থি ছাড়া অবশিষ্ট আর কিছুই নেই। তবে শুয়ে রয়েছে সেই একই ভঙ্গিতে হাতের ওপর চিবুক রেখে। হাতে আজও শোভা পাচ্ছে ব্রোঞ্জের আংটিটি!

টানা ছয় সপ্তাহ খনন করে এই সুন্দরী সম্ভান্ত নারীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। সুন্দরী ও সম্ভ্রান্ত বলার কারণ হলো এই কবরে রয়েছে আনুষঙ্গিক বিলাসবহুল সব জিনিসপত্র যা তার মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য কবরে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় শতাব্দীর কিছু শিল্পকর্ম, রঙিন পুঁতির হাড়, রোম‍ান কাঁচের পাত্র ও কাঁচের সুগন্ধির বোতল।

গবেষকদের ধারণা, এই নারী ছিলেন সে সময়কার অন্যতম অ‍াকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। কারণ তাকে সুসজ্জিত রোমান ব্রোঞ্জ আয়নার সঙ্গে সমাহিত করা হয়। সেই আয়নার দিকে ফিরেই শুয়ে রয়েছেন তিনি।

সাবেক ব্রিটিশ জাদুঘর তত্ত্বাবধায়ক লুইস স্কোফিল্ড জানান, কবরে মৃতদেহের সঙ্গে রয়েছে সুসজ্জিত ব্রোঞ্জ প্রসাধনী ও সুরমা কাজলদানি।

হাজার হাজার পুঁতি দিয়ে সুসজ্জিত এই নারীর দামি বেল্ট বলে দিচ্ছে তিনি সাধারণ নারী নন।
গবেষকরা এখনও তার বয়স ও মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টায় রয়েছেন।


মাটি খননের ফলে আরও পাওয়া গেছে কাদামাটির তৈরি পাত্র। এতে ছিলো মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য খাবার ও পানীয়।

স্কোফিল্ড জানান, রোজই আমরা এখানকার মাটি খুঁড়ে কিছু না কিছু পাচ্ছি। আমি সত্যিই আনন্দিত। আমার আত্মবিশ্বাস ছিলো এখানে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু পাওয়া যাবে। তবে, এমন হারে পাবো তা আশা করিনি।

অকসামিট রাজ্যটি বলতে গেলে খ্রিষ্টীয় আমলের শুরুর দিকে উত্তর ইথিওপিয়াতে পরাক্রমশালী শক্তি ছিলো। প্রথম শতাব্দীতেই স্থানটি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। একশ থেকে ৯৪০  খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যমান শক্তিধর রাজ্যটি ছিলো রোমান সাম্রাজ্য ও প্রাচীন ভারতের মূল বাণিজ্য পথ।

এটি ছিলো শিবার রানীর শহর ও অকুমিট সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। অকসাম নবম শতাব্দী পর্যন্ত লোহিত সাগর উপকূলে আধিপত্য করেছে।

বাইবেল ও কোরআনে শিবার রানী বিলকিসের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাইবেল ও বুক অব ইথারে বিলকিসের কথা উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তার সঠিক পরিচয় এখনও আড়ালেই রয়ে গেছে। তার রাজত্বকাল ছিলো আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৯৫০ অব্দে।

কে বলতে পারে প্রায় দু’ হাজার বছরের পুরোনো মূল্যবান সম্পদে ভরপুর এই কবরটি শিবা রানীর নয়তো!

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।