ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ফুল নেবে গো ফুল!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
ফুল নেবে গো ফুল! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: ফুল ভালবাসে না এমন কে আছে। কারইবা অন্তর না মাতে ফুলের পরশে।

ফুলের মুহু মুহু ঘ্রাণ সবাইকে মাতোয়ারা করে তোলে। ফুল তো বাঙালির কৃষ্টিকালচারের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে মিশে আছে। বাঙালির জীবনাচরণ ও সংস্কৃতিসহ সবকিছুর পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে রকমারি ফুলের সৌরভ।

মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ভাষা দিবস, নববর্ষ, বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের কথা সারাদেশের মতো বগুড়ার মানুষও ফুল ছাড়া ভাবতেই পারেন না।

বগুড়া শহরের খোকন পার্ক রোডস্থ ফুল মার্কেটে গিয়ে ফুল ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে কথা বলে ফুল আর ফুলপ্রেমীদের অনেক কিছুই জানা হলো।

পহেলা ফাল্গুনে তাজা গাঁদাসহ পছন্দের ফুল খোঁপায় লাগাবে না -এমন তরুণী খুঁজে পাওয়াই যেন দায়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সাজসজ্জাসহ ফুলের রয়েছে রকমারি সব ব্যবহার।

এরমধ্যে আলপনা, বাসর ঘর, বিয়ের গাড়ি, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের স্টেজ, ঝুড়ি, ছায়া মণ্ডপ, তোড়া, মালা-এসব কিছু সাজাতে প্রয়োজন বাহারি ফুল।

তাইতো কবি পুর্ণেন্দু পত্রী তার প্রিয়ার উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘তুমি ফুল ভালবাস বলে তোমাকে ফুলের বৃন্তে মাঙ্গলিক উৎসবের মতো লাগে বলে আমাকে ফুলের খোঁজে যেতে হয় পথ খুঁজে খুঁজে সিন্ধুনদ, হিন্দুকুশ, হরপ্পার মতো দূর-দূরান্তরে। ’

প্রেম ও বিদ্রোহের কবি নজরুলের কথায়, ‘নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল, ফুল নেব না অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল। ’

কবিদের এসব কবিতা থেকে বোঝাই যায়, ফুল সৌন্দর্য ও ভালবাসার প্রতীক। তাই ভালবাসার উচ্ছ্বাসমাখা দিবসগুলো ফুল ছাড়া কল্পনা করাই যায় না।

অনামিকা ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারি কাজল দাস, জুয়েল ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারি রমজান আলী, করতোয়া ফুল ঘরের স্বত্ত্বাধিকারি জাহিদুল হক মন্টুসহ একাধিক ফুল ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, এই মার্কেটে ১৭ জন ফুল ব্যবসায়ী রয়েছেন। এখানে রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, বেরোকিলাক্স, জারবারসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফুল বিক্রি করা হয়।

এরমধ্যে রজনীগন্ধার প্রতিটি স্টিক বর্তমানে ২ টাকা ও বিশেষ সময়ে ৫-৭ টাকা, গোলাপ ২-৩ টাকা, বিশেষ সময়ে ১৫-২০ টাকা, গাঁদা ৪০ টাকা (একশ’ পিচ), বেরোকিলাক্স প্রতিটি রকমভেদে ৫-২০টাকা ও জারবার প্রতিটি ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

তারা জানান, এসব ফুল যশোরের বিভিন্ন বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা কিনে আনেন। তবে বগুড়ার মহাস্থান এলাকায় কিছু কিছু ফুল বাগান রয়েছে। সেখান থেকেও তারা ফুল কেনেন। কিন্তু সেটা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

এসব ব্যবসায়ী জানান, রমজান, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে তাদের তেমন একটা ফুল বিক্রি হয় না। এগুলো তাদের মন্দার মাস। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময় ফুল ভাল কেনাবেচা হয়। এসময় প্রত্যেক ব্যবসায়ী গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেন।

আর বিশেষ বিশেষ দিবসগুলোতে তারা গড়ে ৭ হাজার-১০ হাজার টাকার বিভিন্ন বাহারি ফুল বিক্রি করে থাকেন।

এসব ব্যবসায়ী জানান, তারা সবাই তীব্র পুঁজির সংকটে ভুগছেন। ফলে ইচ্ছে ও জানা থাকার পরও তারা নিজেরা কোন ফুলের বাগান বানাতে পারছেন না। তাই এই ব্যবসা করে কোন রকম ‘খাইয়্যা পইৠা বাইচ্চ্যা থাকা চলে’।

ফুল কিনতে আসা কলেজছাত্রী নাসিমা আকতার, শামিমা চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, ফুল তাদের অত্যন্ত ভালবাসা ও পছন্দের জিনিস। তাই তারা প্রায়ই ফুল কেনেন। এছাড়া বিশেষ বিশেষ দিবসে তারা পরিবারের সঙ্গে এসে বাহারি ফুল কিনে থাকেন। পাশাপাশি সবাই মিলে ফুলের মাধ্যমে ভালবাসার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
এমবিএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।