ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

খেজুর ফেরায় শৈশবস্মৃতি

ফটো: নাজমুল হাসান, চিফ অব ফটো করেসপন্ডেন্ট; স্টোরি: শিমনউজ্জামান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৫
খেজুর ফেরায় শৈশবস্মৃতি

ঢাকা: কাঁটাওয়ালা গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা ছোট সবুজ খেজুরে পটকা বানানো, মাঝে-মধ্যে দাঁতে চেপে ভিতরে সাদা মাঁশ খাওয়া- অনেকেরই শৈশবস্মৃতি। শুধু তাই নয়, ক্রমে সবুজ থেকে হলুদে রূপান্তরিত খেজুরে বালিচাপা দিয়ে পাকানোর চেষ্টা এবং সবশেষে লাল মিষ্টি খেজুরের স্বাদ নেওয়া।



গ্রামে বেড়ে উঠে এগুলো করেননি এমন মানুষ বোধহয় খুব কম আছেন। শহুরে পরিবেশে এ দৃশ্য অনেকটা অসম্ভব হলেও গ্রামবাংলায় এখনো অগোচর নয়। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দেখা থোকায় থোকায় হলুদ ডাঁসা খেজুরগুলোকে মনে হচ্ছিলো যেন হলুদরঙা স্বপ্ন!


একপলকে খেজুর গাছ ও খেজুর সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এক ধরনের শাখাবিহীন বৃক্ষের ফল। যার বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা। মানব সভ্যতার ইতিহাসে সুমিষ্ট ফল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় বহু বছর আগে থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে।


খেজুর গাছ সাধারণত মরু এলাকায় জন্মালেও সারা বাংলাদেশেই দেশি প্রজাতির খেজুর গাছ দেখা যায়। মাঝারি আকারের গাছ হিসেবে এই গাছটির গড় উচ্চতা ১৫ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর লম্বা পাতা পাখির পালকের আকৃতির মতো। যা তিন থেকে পাঁচ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।


সুদীর্ঘকাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কাছে খেজুর উপাদেয় খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ধারণা করা হয়, পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোয় প্রথম এর চাষাবাদ হয়।

প্রস্তরযুগে ভারতীয় উপমহাদেশের (বর্তমান পাকিস্তানে) মেরগড় এলাকায় খেজুর চাষাবাদের নিদর্শন পাওয়া গেছে।


বাংলাদেশে সাধারণত খেজুরগাছ রোপণ করা হয় না। খেজুর খেয়ে মাটিতে বীজ ফেললে তা থেকেই খেজুর চারা জন্মায়।


খেজুরে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিমান রয়েছে। পাকা খেজুরে পটাসিয়াম, বোরন, কোবাল্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম ও জিঙ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান থাকে।

বাংলাদেশে খেজুরগাছ কেটে সুমিষ্ট রসও আহরণ করা হয়। এই রস পরবর্তীতে গুড় ও ‍পাটালি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। খেজুর রস থেকে নানা রকমের পিঠা ও পায়েস তৈরি করা হয়ে থাকে।


সারাবছর অবহেলায় পড়ে থাকা গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরগাছের কদর বেড়ে যায় শীতকালে। এ সময় খেজুরগাছ থেকে রস আহরণের উপযুক্ত সময়। আর জ্যৈষ্ঠ থেকে আষাঢ় মাসে থোকা থোকা খেজুরে সুশোভিত হয়ে ওঠে পথ-প্রান্তরের সব খেজুর গাছ। পাকা ফল বিভিন্ন পাখ-পাখালির অন্যতম খাবার। প্রাণ জুড়ায় মানুষেরও।

বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৫
এসইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।