ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দেখলাম আড্ডা দিচ্ছে অসংখ্য উৎফুল্ল মুখ। স্বপ্ন আর সম্ভাবনায় পরিপূর্ন তাদের হাসি।
এরা সবাই ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস্ বাংলাদেশ (ইউল্যাব)- এর বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন সেমিস্টারে পড়ছে।
তারপরও আড্ডার কি বয়স থাকে? অন্তত বাঙালীর আড্ডায় কখনও বন্ধুর বয়স থাকে না।
আড্ডার মাঝ থেকেই সবাই কিছু করার স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্ন ক্লাব নিয়ে। কারণ, এরা সবাই ইউল্যাবের মিডিয়া ক্লাবের সদস্য।
যদিও আড্ডার প্রধান বিষয় থাকে পড়াশুনা, ক্যারিয়ার, রাজনৈতিক সমস্যা, দেশ-বিদেশ, সাহিত্য, মুভি, খেলাধুলা। তারপরও মিডিয়া ক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য বছরে কিছুতো তাদের করতেই হবে।
ইউল্যাবের আরো ১৪টি ক্লাবের মধ্যে এগিয়ে আছে মিডিয়া ক্লাব। প্রায় ৩০০ জন সদস্য নিয়ে মিডিয়া ক্লাব এগিয়ে চলছে। আয়োজন করছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
উদ্যোমের কোনো কমতি পড়ে না। কারণ শক্তি-উদ্যোম-স্বপ্ন তো থাকে তরুণদের মাঝেই। ঐযে একটা কথা আছে না? ‘যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার সময় তার’। ওদের কাছে প্রতিটি আয়োজন এক-একটি যুদ্ধ। এই ক্লাবের সদস্যরা প্রতিটি যুদ্ধে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। যে যুদ্ধে নতুন কিছু করার স্বপ্ন থাকে।
মিডিয়া ক্লাবের সদস্য শারমিন বলে, “আমাদের নানান আয়োজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, কোন বিশেষ বিষয়ের উপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা, নাটক ‘মিডিয়া বাবা জিংগালালা’ এবং ‘সে এক আজব রাজ্য’। ”
এছাড়াও বিভিন্ন ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপ, স্পোকেন ইংলিশ প্রোগ্রাম, চ্যারিটি কনর্সাট, এছাড়াও জাতীয় দিবসগুলোতে যেমন- একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে মিডিয়া ক্লাব।
‘এই সব অনুষ্ঠানের প্রতিটি কাজ হয় আমাদের মতো করে। অর্থাৎ আমরাই সাজাই। ’ বলছিল জনি।
মিডিয়া ক্লাবের সদস্য হয়ে ক্যারিয়ারে কী লাভ হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সবাই বলে, ‘মিডিয়া ক্লাবের প্রাক্তন শিক্ষার্র্থীরা এখন সফলতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে। মাল্টিন্যাশেনাল কোম্পানী, ইলেট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়াতে। তাই ক্যারিয়ারে ক্লাব অভিজ্ঞতা নিশ্চয় কাজে লাগছে। ’
পড়াশোনা শেষ করে যারা জীবন যুদ্ধে চলে গেছে তারা এখনও মিডিয়া ক্লাবের মায়া ছাড়তে পারেনি। সময় পেলেই আড্ডা দিতে চলে আসে ক্যাম্পাসে।
এতে করে একটা লাভের কথা বলে সবাই। লাভটা হলো, তাঁরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা ছোটদের সাথে ভাগাভাগি করে।
ক্লাবের ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে জানতে পারি, ২০০৫ সালে অধ্যাপক আসিউজ্জামান এই ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। তখন নাকি মাত্র ১২/১৩ সদস্য ছিল। ২০০৫-২০১১ খুব বেশী সময় না। এই অল্প সময়ে এই পরিবারের সদস্য বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০ গুন।
মিডিয়া ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ঈশিতা রায়হান বলেন, স্কুল অব মিডিয়ার সকল শিক্ষার্থীদের মিডিয়াতে কাজ করার জন্য মৌলিক যে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন; তার প্রায় সবগুলো আমরা এখান থেকে শিখে যাচ্ছি।
ইউল্যাবের মিডিয়া ক্লাবের স্বপ্ন হচ্ছে, আগামী দিনে মিডিয়াতে নেতৃত্ব দেওয়া। এছাড়া বাংলাদেশের মিডিয়াকে আরও পরিবর্তন করার লক্ষ্যে কাজ করতে চায় ইউল্যাবের মিডিয়া ক্লাব। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তারা নিজেকে তৈরী করছে।